মাদরাসা পড়ুয়া এক ছাত্রীকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করে ইজিবাইক চালক মনির মিয়া (১৭)। মামলা হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিল সে। অবশেষে এক মাস পর গত মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১৪ এর একটি দলের হাতে ধরা পড়ে। পরে বুধবার সকালে তাকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানায় হস্তান্তর করা হয়। থানায় থাকা অবস্থায় ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত কিশোর বলে, ‘আমি তো দোষী, তবে তারে তো বিয়া করতে চাইছিলাম, কিন্তু বয়স অয় না যে’।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নান্দাইলের একটি গ্রামের দিনমজুরের কিশোরী কন্যা স্থানীয় একটি মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। মাদরাসায় ও প্রাইভেটে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করত এলাকার ইজিবাইক চালক আবু ছাঈদের ছেলে মনির মিয়া (১৯)। ঘটনাটি নিয়ে বিচার চাইলেও কোনো ধরনের বিচার পায়নি কিশোরীর পরিবার। এ অবস্থায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরী তার বাবাকে পাশের বাড়ি থেকে ডেকে আনতে গেলে মনির তার পথ আটকিয়ে দাঁড়ায়।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, এ সময় মনির তাকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করে। পরে মনির চলে যেতে চাইলে তাকে জাপটে ধরে কিশোরী চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এলেও দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরদিন এলাকায় বিচার চাইলে স্থানীয় সালিসকারীরা বসে ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ের সিদ্ধান্ত ছাড়াও আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সালিসের সিদ্ধান্ত কার্যকরী না হওয়ায় পাঁচ দিন পর কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি মীমাংসা করতে সালিশের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য জিলু মিয়া। এ ছাড়াও ছিলেন আবু ছাঈদ, সুমন, মজিদ, মদিনা আক্তার, পাবেল মিয়া ও আবু ছিদ্দিক। তাদের হস্তক্ষেপে ঘটনাটি ধামাচাপা পড়তে বসেছিল। কিন্তু থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা তদন্তে নামে।
এদিকে, মামলার পরপরই গা ঢাকা দেয় মনির। পুলিশ খুঁজে তাকে পাচ্ছিল না। অবশেষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার সাভারের আশুলিয়া এলাকার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গত মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৪ এর একটি দল। পরে নান্দাইল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
থানায় থাকা ধর্ষণে অভিযুক্ত মনির জানায়, সে একদিন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। তবে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া ছিল। ধরা খাওয়ায় মেয়েটি তাকে ফাঁসিয়ে দেয়। এরপর বিয়ে করতে চাচ্ছিল। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ফয়সালা করতে চায় তার পরিবার। কিন্তু মেয়ের পরিবার এক লাখ টাকা চাওয়ায় দেওয়া সম্ভব হয়নি।