গত প্রায় পাঁচ মাস আগে ১৩ বছর বয়সের কিশোরীকে বিয়ে পড়ানোকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এক কাজী। পাঁচ মাস পর ১৮ বছর দেখিয়ে সেই বিয়ে পড়ালেন আরেক কাজী। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। এ ধরনের ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের ভুলসোমা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের স্কুল-পড়ুয়া কিশোরীকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল গত ১৭ অক্টোবর ২০২০ সালে। এ অবস্থায় এলাকার কাছ থেকে খবর পায় উপজেলা প্রশাসন। পরে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাঈদা পারভিন। তিনি যাওয়ার আগেই বিয়ে বাড়ি ত্যাগ করেন বর পক্ষ। অন্যদিকে কনের লোকজনও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে বিয়ে পড়াতে আসা উচাখিলা ইউনিয়নের কাজী মো. শহিদুল ইসলামকে আটক করে তাঁর স্বীকারোক্তিতে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১৫ দিনের জেলের আদেশ দেন। এ অবস্থায় পুলিশ ওই দিনই কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কাজী শহিদুল ইসলামকে কারাপরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।
অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয় একই গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে মো. শাকিলের সঙ্গে। এ অবস্থায় বিয়ে পড়াতে কোনো কাজী রাজি না হলেও বড়হিত ইউনিয়নের নিকাহ নিবন্ধক কাজী নুরুল ইসলাম নুরুল্লাহ বিয়ে পড়াতে সম্মতি দেন। পরে ওই কিশোরীর ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে বয়স ১৮ দিয়ে গত ৭ মার্চ বিয়েটি সম্পন্ন করেন। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন এলাকার আনোয়রুল হক পলাশ নামে একজন।
তিনি বলেন, মেয়েটি প্রেম করে ঘর ছাড়লে বেকায়দায় পড়েন পরিবার। পরে তাঁদের অনুরোধে ছেলে-মেয়েকে ঘরে উঠানোর ব্যবস্থা করে দেই। তবে বিয়েটি সম্ভব করিয়েছেন কাজী নুরুল ইসলাম নুরুল্লাহ। তবে বিয়ে পড়ানোর কথা অস্বীকার করে কাজী নুরুল্লাহ বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিয়ে আমার সঠিক ভলিয়মে রেজিস্ট্রি করি না। তবে কি অন্যভাবে করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পড়ে আপনার সঙ্গে কথা বলব। এই বলে ফোনটি কেটে দেন।
জামিনে আসা দণ্ডপ্রাপ্ত কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় দুই মাস আগে তিনি জামিনে এসেছেন। তিনি জেনেছেন বয়স বাড়িয়ে গত সপ্তাহে বিয়েটি পড়িয়েছেন পাশের ইউনিয়নের কাজী নুরুল ইসলাম নুরুল্লাহ।