নেত্রকোনায় আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) ভোর থেকে শিলাবৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে বোরো, নানা ধরণের সবজি, লিচু ও আম মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার সদর, কলমাকান্দা, মদন, খালিয়াজুরি ও পূর্বধলা উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, শীতের পর নেত্রকোনায় আজ ভোরে প্রথম বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির সাথে শিলা পড়ে বসতঘর, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নেত্রকোনা সদর উপজেলার অনন্তপুর, ফচিকা, দেওপুর, বালি এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে বাড়ি-ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। বোরো ফসলের ক্ষতি ছাড়াও লিচু ও আমের মুকুল ঝরে গেছে। ক্ষতি হয়েছে শাকসবজিরও।
অনন্তপুর গ্রামের কৃষক আইন উদ্দিন বলেন, ‘আমার সবজি ক্ষেতের গাছ মাটিতে মিশাইয়া ফালাইছে।’
একই গ্রামের আছিয়া বেগম বলেন, ‘ভোরে পয়লা বৃষ্টি পড়তে থাকলেও শিল আছিল না। কিছুক্ষণ পরেই শিল পড়া আরম্ভ হইছে। ৬ থেকে ৭ মিনিট টানা পড়ছে। চাল ভাইঙ্গা ছিদ্রি কইরালছে। ঘরের ভিতরে শিল পড়ছে।’
দেওপুর গ্রামের কৃষক রফিক মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টিটা বোরো ফসলের লাইগ্যা ভালই হতো। কিন্তু পাথর (শিল) পইরা ধান গাছের গজানো শীষ নষ্ট অইয়া গেছে। আমরার এলাকার বালি ফচিকাতেও বেশি ক্ষয়ক্ষতি অইছে।’
ফচিকা গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এইবার আম ও লিচু গাছে ফলন ভাল অইতো। অনেক মুকুল ধরছিল। কিন্তু শিলে অনেক ক্ষতি অইছে। মুকুল পইরা গেছে। গাছে যেগুলান আছে ওইগুলাতেও ফলন অইব না। শিলের আঘাতের লাইগা টিকবো না।’
নেত্রকোনা সদরের অনন্তপুর গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, ‘আম বাগানের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে আমের মুকুল ঝরে গেছে। মুকুল ঝরে যাওয়ায় আশানুরূপ আম উৎপাদন হবে না।’
খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামীম মোড়ল বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২৫ শতাংশ বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বোরো জমি তিনি পরিদর্শন করেছেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, ‘শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ছায়ার হাওর ও বয়রার হাওরের বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের মুকুলের। বোরো ধানের তেমন কোনো ক্ষতির খবর আমরা পাইনি। প্রতিটি উপজেলায় খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।’