জুমার নামাজের খুতবায় সরকারবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে মাদরাসা শিক্ষককে গালাগালসহ বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে কর্তৃপক্ষ মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করে দ্রুত হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সোমবার এ ধরনের ঘটনা ঘটে উপজেলার জামিয়া গাফুরিয়া দারুস সুন্নাহ ইসলামপুর মাদরাসায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার ওই মাদরাসা কমপ্লেক্স মসজিদে খুতবা পাঠের সময় খতিব মো. কাউসার হাসান সরকারবিরোধী বক্তব্য রাখেন বলে অভিযোগ উঠে। খতিবের বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল, এ দেশে হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়। কিন্তু ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বললে কারও বিরুদ্ধে মামলা নেয় না সরকার। মসজিদের খুতবা পাঠের সময় এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করায় সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে কয়েক মুসল্লি নামাজের পর ঘটনাটি জানান মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী রফিকুল ইসলাম বুলবুলকে।
হাজী বুলবুল বলেন, ঘটনার সময় তিনি ময়মনসিংহে ছিলেন। বিকাল চারটার দিকে এলাকা থেকে কয়েকজন তাঁকে ফোন করে ঘটনাটি জানায়। তিনি ইসলামপুর মাদরাসার প্রধানকে (মোহতামিম) ফোন করে ঘটনাটি জানতে চান। পরে কাউসার হাসানের কাছে ঘটনাটি জানতে চাইলে তিনি অত্যন্ত রূঢ় আচরণ করেন। এ সময় তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে খতিবকে কয়েকটা কথা শুনিয়ে দেন। পরে খতিব ঘটনাটি বাড়িয়ে প্রচার করে মাদরাসার ছাত্রদের তাঁর বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কাউসার হাসানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কাউকে মাদরাসার ভেতরে যেতে বা বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি।
ছাত্র বিক্ষোভ চলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, মাদরাসার ফটক আটকে দিয়ে হাজী বুলবুলের বিরুদ্ধে ছাত্ররা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। ছাত্রদের একটি সূত্র জানায় আগামী ১৮ মার্চ কওমি মাদরাসার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এখন মাদরাসা বন্ধ করে তাঁদেরকে হল থেকে বের করে দিলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মসজিদের ভিতর সরকারের সাথে জেহাদ ঘোষণা করা খুবই খারাপ কাজ। এর প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষক পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করেছিল। তাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য মাদরাসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।