করোনাকালীন সময়ে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি বিষয়ক গবেষণা। তবে বহিরাগত বিড়ম্বনায় বেগ পেতে হচ্ছে গবেষকদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের মাঠে সূর্যমুখী ও সরিষা ক্ষেতে বহিরাগতদের উপচে পড়া ভিড়ে নষ্ট হচ্ছে গবেষণার ফসল। এছাড়াও বহিরাগতরা বেখেয়ালে কিংবা ইচ্ছা করেই বিভিন্ন গাছের ফুল, ফল ছিঁড়ছেন কিংবা গাছের ঢাল ভাঙছেন। কিন্তু তারা জানেনই না, এসবের সাথে জড়িত আছে একটি গবেষণা ফলের। বহিরাগতদের এ ধরনের কাজে গবেষণায় বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন এসময়ে শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা। বিশেষ করে ছুটির দিনে বহিরাগতদের ভিড় বেড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায়। এতে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ফসল। বহিরাগতরা কোনো কিছু না ভেবেই ছিঁড়ে ফেলছে গবেষণার ফুল, ফল এবং নষ্ট করছে গাছ। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যহানির পাশাপাশি বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা বলেন, বহিরাগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন সময় গবেষণা প্লট ও সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়ছে। অনেক সময় তারা গাছের ফুল, ফল ও ফসলের মাঠের ক্ষতি সাধন করে স্বাভাবিক গবেষণা কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বহিরাগত দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা বাসায় আর বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে। মাঝে মধ্যেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বিভিন্ন বিশৃঙ্খলার খবর শুনতে পাই। বহিরাগতরা কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ক্যাম্পাসকে রীতিমত পার্ক বানিয়ে ফেলেছে। প্রশাসন শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই বাধাধরা নিয়ম করে দেয়, অন্যদিকে বহিরাগতদের সামাল দিতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী শাহিনুর ইসলাম বলেন, ছুটির দিনগুলোতে বহিরাগতদের আনাগোনা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। তাদেরকে ঠেকানো এক প্রকার কঠিন হয়ে পড়ছে। তাদেরকে নিষেধ করলে অনেক সময় তারা কথা না শুনে আমাদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা খুব শিগগিরই এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেব।