কিশোরগঞ্জে নিরবচ্ছিন্ন সেবার মাধ্যমে জনবান্ধব ও মানবিক পুলিশিং ব্যবস্থা এবং এর মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের জন্য সর্বস্তরের মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করতে মসজিদে মসজিদে গিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
এর অংশ হিসেবে শুক্রবার (৫ মার্চ) জেলার ১৩টি থানার প্রতিটিতে প্রধান প্রধান মসজিদে জুমআর নামাজের খুতবার আগে সচেতনতামূলক বক্তব্য রেখেছেন সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) ও উর্ধ্বতন অফিসারগণ।
থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) ও উর্ধ্বতন অফিসারগণ তাদের বক্তব্যে বর্তমান পুলিশিং ব্যবস্থাকে আধুনিক ও জনবান্ধব হিসেবে আখ্যা দিয়ে কোন ধরণের অবৈধ লেনদেন ছাড়াই পুলিশের যেকোন সেবা গ্রহণ করা যাবে বলে মুসল্লিদের আশ্বস্ত করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তাগণ তাদের বক্তব্যে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে বাসার মালিকদের তাদের ভাড়াটিয়াদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে থানায় জমা দানের জন্য উৎসাহিত করেছেন।
এছাড়া মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং সম্পর্কে কেউ কিছু জানতে পারলে থানা পুলিশকে জানাতে আহ্বান জানিয়ে সংবাদদাতার পরিচয় গোপন রাখার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তাগণ তাদের বক্তব্যে সাইবার ক্রাইম ও গুজব সম্পর্কে ধারণা দেন যেন তারা এ ধরণের অপরাধ সনাক্তসহ নিজেদের এ ধরণের অপরাধের সাথে যুক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
এছাড়া বর্তমানে পুলিশের আধুনিক সেবা ৯৯৯ এর ব্যবহার সম্পর্কেও তারা অবগত করেন।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম।
ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম তাঁর বক্তব্যে বলেন, এক সময় সমাজকে পুলিশকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে ধারণা করা হতো। কিন্তু বর্তমান পুলিশ আধুনিক, মানবিক এবং দুর্নীতিবিরোধী। মানবিক ও নিরবচ্ছিন্ন সেবার ব্রত ও অঙ্গীকার নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে পুলিশ। সম্প্রতি প্রকাশিত টিআইবি’র রিপোর্টেও পুলিশের এই ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়টি ওঠে এসেছে।
ওসি আরো বলেন, থানায় কোন ধরণের অবৈধ লেনদেন ছাড়াই পুলিশের যেকোন সেবা গ্রহণ করা যাবে। যদি কারো বিরুদ্ধে অবৈধ কোন লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমনকি যদি আমার বিরুদ্ধেও কোন অনৈতিক কাজের অভিযোগ ওঠে সে ব্যাপারেও এসপি স্যার ও ডিআইজি স্যার আমার বিরুদ্ধেও অনুরূপ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কোন শৈথিল্য প্রদর্শন করবেন না।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) দেশব্যাপী পুলিশের সেবাকে মানুষের দারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিভিন্ন যুগপোযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন।
এর ধারাবাহিকতায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর নির্দেশে কিশোরগঞ্জ জেলায় পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) এর দিক-নির্দেশনায় সকল সার্কেল ও থানা পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বলেন, জনতার পুলিশ হিসেবে আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসকে সঙ্গী করে তাদের সহযোগিতায় সমাজ থেকে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের শিকড় উপড়ে ফেলতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা পুলিশ এবং জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনার জন্য কাজ করছি, যেন পুলিশ সম্পর্কে তাদের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন ঘটে।
এর অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ জঙ্গিবাদের কুফল, মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব, নারী ও শিশু নির্যাতন, শিশু শ্রম, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং বন্ধ এবং সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে।