পঞ্চম ও শেষ ধাপে অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইফতেখার হোসেন বেনু (নৌকা) মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২৮ হাজার ৩শ’ ভোটের বিশাল ব্যবধানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজি মো. শাহিন (ধানের শীষ) কে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইফতেখার হোসেন বেনু (নৌকা) পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৯শ’ ৪৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজি মো. শাহিন (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৯ হাজার ৬শ’ ৪৯ ভোট।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে গেছেন।
সকালে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে ভোট দিতে দেখা গেছে।
প্রথমবারের মতো ইভিএমের মাধ্যমে এই পৌরসভায় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে ছিল। পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম এবং পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভৈরব শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইফতেখার হোসেন বেনু নিজ কেন্দ্র পলতাকান্দা সৃজনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজি মো. শাহিন কালিপুর ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ-আল মামুন (মোবাইল) ভৈরবপুর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলেও কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আমলাপাড়া কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী শিমুলের সমর্থকদের সাথে লোকমান সরকার ও অন্যান্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ ও ৩ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
১২টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন যারা: ১নং ওয়ার্ডে মো. আল আমিন সৈকত, ২নং ওয়ার্ডে মো. দ্বীন ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ডে মমিনুল হক রাজু, ৪নং ওয়ার্ডে শহিদুল ইসলাম শিমুল, ৫নং ওয়ার্ডে মো. ফজলু মিয়া, ৬নং ওয়ার্ডে মোশারফ হোসেন মিন্টু, ৭নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আলী সোহাগ, ৮নং ওয়ার্ডে হাবিবুল্লাহ নিয়াজ, ৯নং ওয়ার্ডে হাজী মো. মোমেন, ১০নং ওয়ার্ডে হাজী মনির হোসেন, ১১নং ওয়ার্ডে মো. মানিক মিয়া ও ১২নং ওয়ার্ডে মো. ইব্রাহিম মিয়া।
৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন যারা: ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে মোছা. আসমা বেগম, ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে রোজী ইসলাম, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে শামীমা পারভেজ শিমু এবং ১০, ১১ ও ১২নং ওয়ার্ডে মৌসুনা রহমান বেলা।
এবারের পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জনসহ মোট ৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন।
ভৈরব পৌরসভায় ৩৫টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৭শ’ ১৩। এর মধ্যে নারী ভোটার ৪০ হাজার ৩শ’ ৭ জন এবং পুরুষ ভোটার ৩৯ হাজার ৪শ’ ৬ জন।
নির্বাচনে মোট ভোট দিয়েছেন ৫২ হাজার ৮০৪ জন। ভোট প্রদানের শতকরা হার ৬৬.২৬ ভাগ।