কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালানোর পর পরিবারের পক্ষ থেকে করা অভিযোগটি এখন পর্যন্ত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। উল্টো পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা সচিবের বিরুদ্ধে প্রতিদিন হয় কটিয়াদী, না হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা পাকুন্দিয়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। যতই দিন গড়াচ্ছে, প্রতিবাদের ভাষা হচ্ছে অশালীন।
গতকাল বুধবার দুপুরে পাকুন্দিয়ায় স্বাস্থ্যসেবা সচিবের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। বরাবরের মতোই কর্মসূচির আয়োজক ক্ষমতাসীন দল। কটিয়াদীর ঘটনার সূত্র ধরে এ নিয়ে পাকুন্দিয়ায় স্বাস্থ্যসচিব বিরোধী দ্বিতীয় দফা কর্মসূচি পালিত হলো। কটিয়াদীতেও দুই দফা অনুরূপ কর্মসূচি হয়। মানববন্ধন হয় পাকুন্দিয়া-কিশোরগঞ্জ সড়কে। প্রতিবাদ সভাটি হয় পাকুন্দিয়া সদর ঈদগাহ মাঠে।
গতকাল পাকুন্দিয়ার কর্মসূচির আয়োজকদের হাতে ছিল শতাধিক ব্যানার-ফেস্টুন। ফেস্টুনে স্বাস্থ্যসচিবকে ভূমিদস্যু, দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী অভিহিত করে ‘স্বাস্থ্যসচিবের দুই গালে, জুতা মার তালে তালে’ স্লোগান ব্যবহার করা হয়। একই আয়োজন থেকে স্বাস্থ্যসেবা সচিবের কুশপুত্তলিকাও দাহ করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলার সাবেক কৃষক লীগ সভাপতি বাবুল আহমেদ। স্বাস্থ্যসেবা সচিবের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার নেতৃত্ব দানকারীদের একজন বাবুল আহমেদ বলেন, পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নূর মোহাম্মদ। এই দুই উপজেলার উন্নয়ন হচ্ছে সাংসদের তত্ত্বাবধানে। সচিব সরকারের একজন আমলা। সাংসদকে না জানিয়ে নিজ এলাকায় উন্নয়নকাজ করা মানে সাংসদকে ছোট করা। সাংসদকে ছোট করে কাউকে কিছু করতে দেওয়া হবে না।
স্বাস্থ্যসেবা সচিবের পরিবারের করা অভিযোগটি এখনো মামলা হিসেবে গ্রহণ না হওয়া এবং নতুন করে আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের ক্ষোভ বাড়ছে। অভিযোগটির বাদী স্বাস্থ্যসেবা সচিবের আপন ছোট ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মামলা না হলে কী হবে, নিয়মিত হুমকি পাচ্ছি। ঘটনার পর থেকে আমি কর্মস্থলে যাচ্ছি না। কিন্তু মঙ্গলবার কয়েকজন লোক ব্যাংকে গিয়ে আমার খোঁজ করেছেন মামলা করলে খবর আছে, সেই কথাও বলে এসেছেন।’
এসব বিষয়ে কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে সাংসদ নূর মোহাম্মদের সঙ্গে কথা হয়। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যসেবা সচিবের এলাকায় অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা ও জমি দখল দায়ী এবং এসব এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের সৃষ্ট ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন তিনি।