শেরপুরে এমপিও’র দাবিতে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে চাকুরী এমপিওভুক্তির দাবীতে বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন শেরপুর জেলা শাখা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষকদের বর্তমান বাজারে পরিবারের ভরণপোষণ ও দিনাতিপাত করা একেবারেই অসম্ভব। শিক্ষকদের যে ন্যূনতম বেতন দেওয়া হতো সেটাও বর্তমানে করোনা মহামারিতে প্রায় এক বছর বন্ধ ধরে রয়েছে। এসকল শিক্ষকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ২৮ বছর ধরে বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকরা শুধুমাত্র জনবল কাঠামোতে না থাকার কারণে এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছে। গত বছরের শেষদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জনবল কাঠামো সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। উক্ত সংশোধনীর প্রথম সভায় অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে সরকারের পলিসির বিষয় উল্লেখ করে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের নীতিমালার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন সংশোধনী কমিটি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজগুলোতে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয় ১৯৯৩ সাল থেকে, কিন্তু এই শিক্ষকদের জন্য আজ পর্যন্ত কোন নীতিমালা তৈরি করা হয়নি। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে পাঠদানের অনুমতি, সিলেবাস প্রণয়ন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, ফলাফল প্রকাশসহ সকল কার্যক্রম তদারকি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বেতনের বেলায় সরকারি সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়। বহু দেন-দরবারের পরে এসব শিক্ষকদের বেতন ভাতা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রচলিত স্কেলে শতভাগ প্রদানের আদেশ জারি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান গুলোতে ফান্ড না থাকার কারণ দেখিয়ে উক্ত আদেশ না মেনে কলেজ ভেদে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন প্রদান করে। শিক্ষকদের উক্ত বেতনের বর্তমান বাজারে পরিবারের ভরণপোষণ ও দিনাতিপাত করা একেবারেই অসম্ভব। শিক্ষকদের যে ন্যূনতম বেতন দেওয়া হতো সেটাও বর্তমানে করোনা মহামারিতে প্রায় এক বছর ধরে রয়েছে।
এসকল শিক্ষকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিগত দিনে ৩ টি নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রদান করা হয়। যা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দুটি সুপারিশ ও শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক দু’জন মহাপরিচালকের দুটি সুপারিশ থাকার পরেও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।