ময়মনসিংহে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে এক নারীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাব-১৪। তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। রিমান্ডে বিস্তারিত ঘটনা উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে র্যাব জানিয়েছে, চাকরির নামে গ্রাম থেকে কমবয়সী এই মেয়েদের নিয়ে অন্ধকার জগতে ঠেলে দিয়ে অনৈতিক কাজে যুক্ত করা হতো।
সূত্র জানাচ্ছে, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পরানগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামের এই কিশোরী একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পরিবারের কাউকে কিছু না জানানোর শর্তে তাকে ‘ভালো চাকরি’ দেওয়ার কথা বলে ফাঁদে ফেলে প্রতিবেশী আমির উদ্দিনের মেয়ে আম্বিয়া। ৩১ জানুয়ারি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় কৃষকের এই কিশোরী (১৩) মেয়ে। পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেও তাকে কোথাও পাননি।
জানা গেছে, তিন দিন আটকে রাখার পর কিশোরীকে আম্বিয়ার বাড়ি থেকে গাজীপুর পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে আম্বিয়াকে দালাল মো. আশকর আলী সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে। এরপর ভালুকার জমিরদিয়া এলাকায় মো. সুরুজ মিয়ার বাড়িতে আটকে রাখা হয় কিশোরীকে। সুরুজ ও আশকর দু’জনই পরানগঞ্জের আবদুল্লাহপুর এলাকার বাসিন্দা। আম্বিয়ার বাড়িতে বারবার খোঁজ করায় কিশোরীর বাবাকে মোবাইল ফোনে হুমকিও দেয় সুরুজ মিয়া।
পরে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কার্যালয়ে যান কিশোরীর বাবা। গত বুধবার রাতে র্যাব অভিযান চালায় ভালুকার জমিরদিয়া এলাকায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি বাড়ি থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় আম্বিয়া খাতুন, তার বাবা আমির উদ্দিন, মা মজিদা খাতুন, দালাল আশকর আলী ও সুরুজ মিয়াকে। তাদের বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় র্যাব।
চাকরির প্রলোভনে অপহরণের এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় পাঁচ আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
র্যাব-১৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসাইন বলেন, চাকরির লোভ দেখিয়ে মেয়েদের নিয়ে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করত স্বামীপরিত্যক্ত আম্বিয়া। কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ পেয়ে পাঁচজনকে আটক করেছেন তারা। এর আগেও আরও কিশোরীকে এলাকা থেকে এভাবে নিয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছে এলাকার লোকজন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফারুক হোসেন বলেন, মামলার পর পাঁচ আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করা হবে।