জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার নরপাড়া লৌহজং খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় লোকজনকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতুটি পারাপার হতে হচ্ছে। এতে স্থানীয় সাত গ্রামের মানুষকে ঝুঁকির সঙ্গে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। সেতুটি নির্মাণের তিন বছর পার হলেও সংযোগ সড়ক তৈরি হচ্ছে না। ফলে বাঁশের সাঁকো হয়ে সেতুর ওপর দিয়ে খাল পার হতে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয় বাশুরিয়া শামসুন্নাহার উচ্চবিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ বলেন, ‘বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতু পার হয়ে বাদাই গ্রাম থেকে আমার বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়তে আসে। যাতায়াতের জন্য সংযোগ সড়ক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে।’
এলাকাবাসী, পিংনা ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পিংনা ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নরপাড়া লৌহজং খালের ওপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩০ লাখ ৯০ হাজার ২০ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে সেতুটির পশ্চিম পাশে ৬০ ফুট সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কাজে আসছে না। চার বছর আগে সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক আর হলো না। এ কারণে গ্রামের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়।
নরপাড়া গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল মালেক বলেন, চার বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক করা হয়নি। এ কারণে নিজেদের উদ্যোগে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো তৈরি তার খাল পারাপারের ব্যবস্থা করছেন।
নরপাড়া লৌহজং খালে বছরের ছয় মাস বন্যার পানি থাকায় গ্রামের মানুষ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর গ্রামের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা খেতের ওপর দিয়ে হেঁটে শহরে আসেন। সংযোগ সড়ক না থাকায় কৃষকের জমিতে উৎপাদিত ফসল অনেক কষ্টে বাড়িতে নিতে হয়।
পিংনা ইউপির চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন বলেন, সংযোগ সড়ক করে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে প্রতিবছর আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। সংযোগ সড়ক তৈরি করা হলেই সেতু দিয়ে যাতায়াতে মানুষের ভোগান্তি কমবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হুমায়ূন কবীর বলেন, সেতুর পশ্চিমে এ অর্থবছরেই সংযোগ সড়ক করে দেওয়া হবে। সড়ক তৈরি করে দেওয়া হলে সেতুতে মানুষের যাতায়াতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
সেতুটি সচল করতে ও সড়ক তৈরি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমদ।