বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, আগামী বছর তারা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার শুরু দেখতে চান। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনীতিক সংবাদদাতাদের আয়োজিত ডিক্যাব টকে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের উচিত পরের বছর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা। জাপান এতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।’
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সভাপতিত্বে ডিক্যাব টকে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান বক্তব্য দেন।
ইতো নাওকি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রত্যাবাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে মিয়ানমারের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা এবং সরকারি পর্যায়ে সরাসরি যোগাযোগ করছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মতো মিয়ানমারও জাপানের ঐতিহ্যবাহী বন্ধু হিসেবে রয়েছে এবং উভয় দেশের মধ্যেই দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশ এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে যারা নিজ দেশে নির্যাতনের পর পালিয়ে এসেছে।
গত দুই বছরে মিয়ানমার বাংলাদেশ থেকে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি। তার ওপর মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘বিভ্রান্ত করার’ প্রয়াসে দাবি করছে যে মোট ৩৯৭ জন বাস্তুচ্যুত মানুষ স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফিরে গেছে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ‘বিশ্বাসের ঘাটতি দূর করতে ব্যর্থ হওয়ায়’ তাদের প্রত্যাবাসনের দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আর প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে ‘অনুকূল পরিবেশের অভাব’ রয়েছে।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, কোভিড-১৯ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এশিয়া ও এর বাইরেও বাজার ও সরবরাহ ব্যবস্থা সংহত করতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নাওকি বলেন, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র আসবে। তিনি আরো বলেন, বর্ধিত সম্ভাবনা এবং ভৌগোলিকভাবে কৌশলগত অবস্থানসহ চারটি কারণে জাপান বাংলাদেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার চমৎকার কাজ করেছে। তিনি বলেন, ‘আগামী বছর থেকে বিনিয়োগের প্রবাহে এর প্রভাব পড়বে।’