দেশের সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা জোরদার ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পর্যায়ক্রমে ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও পরিবহণ সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা জোরদার ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে গঠিত চারটি কমিটি তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে। সড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ১১১ দফা সুপারিশ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহণ সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদার ও দুর্ঘটনা কমাতে ১১১টি সুপারিশ ছিল। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সভায় সবাই তাদের সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন কীভাবে এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যায়। এর আগে প্রথম সভায় চারজন সচিবের নেতৃত্বে চারটি কমিটি করে দিয়েছিলাম, কীভাবে এই ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যায়। তারা আজকে তাদের সুপারিশ দিয়েছে। তাদের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা ও আলোচনা করা হয়েছে। চারটি কমিটির সুপারিশের বিষয়গুলো আগামী সভায় জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান জানান, সরকার ১১১ দফা সুপারিশ ধীরে ধীরে বাস্তবায়নে যাবে। ‘ধীরে যাব এ কারণে যে কোভিডের কারণে সারা বিশ্ব আজ এটা স্থবির অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা বসে নেই, কাজ করছি। আমরা সর্বক্ষেত্রে কাজ করছি বলেই আমাদের সব কিছু চলছে। তারপরও কোভিডের জন্য আমরা অনেক কিছু থেকে পিছিয়ে পড়েছি। সেই জায়গা থেকে উত্তরণের জন্য আগামী সভাগুলোতে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কীভাবে কাজ করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
সুপারিশ বাস্তবায়নে বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশি সময় নেইনি। ২০১৯ সালের শুরু দিকে এ কমিটি হয়েছিল। কমিটি হওয়ার পরই সভা করেছি। সেখানে চারটি কমিটি করেছি। তাদের মূল লক্ষ্য হলো এ সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে আমাদের করণীয় কী? তারা সেই করণীয় সম্পর্কে আজকে কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করছি, যেখানে যেটা প্রয়োজন সেটা করছি এবং বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা নেব। সেখানে প্রধানমন্ত্রীরও কতগুলো দিক নির্দেশনা রয়েছে। আমাদের আইন রয়েছে সেই আইনেও বিধিমালা কিছু পাস হয়েছে। সেসব বিবেচনায় নিয়ে আমরা সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কাজ করব।’
সুপারিশ বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কবে নাগাদ যাওয়া যাবে, তা জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এখন কেউ মোটরসাইকেলে হেলমেট ছাড়া চড়ে না। এ রকম অনেক সুপারিশ আমরা ধীরে ধীরে বাস্তবায়নে যাচ্ছি। আমরা আরো তড়িৎ গতিতে কীভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাজাহান খান, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কাঞ্চন সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন।