বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুষ্ঠুভাবে টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গড়া জোট কোভ্যাক্স ২০০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা তাদের আগের ঘোষণার প্রায় দ্বিগুণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস বা সিইপিআই এর নেতৃত্বাধীন এই জোট শুক্রবার জানিয়েছে, আসছে নতুন বছরে তারা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশে ১৩০ কোটি ডোজ টিকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।
এক বিবৃতিতে কোভ্যাক্স বলেছে, যে ১৯০টি দেশ এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, তার সবগুলোতেই ২০২১ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে টিকা পৌঁছানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর প্রথম চালান আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকেই পাঠানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে বিষয়টি নির্ভর করছে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও দেশগুলোর প্রস্তুতির ওপর।
আজকের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে মহামূল্যবান বহু প্রাণ বাঁচানোর এবং মহামারীর সবচেয়ে খারাপ পর্যায়টি পার করার একটি স্পষ্ট পথরেখা মিলবে।
টিকার জন্য শুক্রবার নতুন যে চুক্তিগুলোর কথা কোভ্যাক্স জানিয়েছে, তার মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে আসবে ১৭ কোটি ডোজ। এ ছাড়া আরও ৫০ কোটি ডোজ টিকার জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে কোভ্যাক্স।
সিইপিআইয়ের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড হ্যাটশেট জানিয়েছেন, ফাইজার ও বায়োএনটেকের সঙ্গেও টিকার জন্য তাদের আলোচনা চলছে। এ দুটি কোম্পানি ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে।
তাছাড়া মডার্নার টিকাও শিগগিরই অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গেও আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন রিচার্ড হ্যাটশেট।
গরিব দেশগুলোও যাতে টিকা পায়, সেই লক্ষ্যেই গত এপ্রিলে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি বা কোভ্যাক্স নামের এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়, যাতে অর্থায়ন করছে বিভিন্ন দাতা দেশ, বিশ্ব ব্যাংকের মত বহুজাতিক সংস্থা এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মত দাতব্য সংস্থা।
বাড়তি টিকার জন্য কোভ্যাক্সের চুক্তিবদ্ধ হওয়ার এই খবরকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য এটি একটি ‘মাইলফলক’।
গ্যাভির প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেন, পুরো বিশ্বকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা সরবরাহের যে লক্ষ্য তারা স্থির করেছেন, তা ঠিক পথেই আছে, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে দরকার আরও টিকা এবং অবশ্যই আরও টাকা।