লা মেরিডিয়ান হোটেলকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে বিএসইসির নিষেধাজ্ঞার পর এবার নিজের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) অর্থমন্ত্রীর পক্ষে তার একান্ত সচিব মো. ফেরদৌস আলম স্বাক্ষরিত চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, লা মেরিডিয়ান হোটেলকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর পাঠানো চিঠির বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
লা মেরিডিয়ান হোটেলে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের। এ চার ব্যাংকের মালিকানার অংশের কারণেই কোম্পানিটিকে সরকারি কোম্পানি বলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অপচেষ্টা করা হয়।
আইন অনুসারে, সরকারি মালিকানাধীন ছাড়া বেসরকারিখাতের কোম্পানিকে সরাসরি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বিএসইসির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা আইনি ফাঁকফোকর ব্যবহার করে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা তুলে নিতে চেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা।
লা মেরিডিয়ানকে শেয়ারবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে রেইস পোর্টফোলিও অ্যান্ড ইস্যু ম্যানেজমেন্ট এবং আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।
এদিকে, ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএসইসির চেয়ারম্যান বরাবর লেখা অর্থমন্ত্রীর ওই চিঠিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লা মেরিডিয়ান হোটেলকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সরাসরি তালিকাভুক্তি বা ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বেসরকারিখাতের কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বিএসইসির নিষেধাজ্ঞা–সংক্রান্ত নির্দেশনা শিথিলের কথা বলা হয়েছিল
বিএসইসির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেসরকারি কোম্পানিকে সরকারি কোম্পানির তকমা দিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেন ডিএসইর প্রভাবশালী এক পরিচালক। যিনি ১৯৯৬ ও ২০০০ সালের দুইবারের শেয়ার কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত। তারই প্রভাবে ডিএসইর ১৭ ডিসেম্বরের পর্ষদ সভায় অনুমোদনের জন্য বিষয়টি গত বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সরকারি ছুটির দিনে অতিরিক্ত আলোচ্যসূচি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে বিএসইসি জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির বিষয়ে পর্ষদ সভায় কোনো ধরনের আলোচনা না করার নির্দেশ দেয় বিএসইসি। পাশাপাশি ডিএসইর কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চায় বিএসইসি।