নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূকে নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন এখনো পলাতক। এ ছাড়া মামলা দুটি থেকে গ্রেফতারকৃত আসামি রহমত উল্যা ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন দেলু, জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামাল, নূর হোসেন বাদল, আব্দুর রহিম, মোহম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম, সামছুদ্দিন সুমন ওরফে কন্ট্রাক্টর সুমন, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, নূর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, আব্দুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে আরিফ, মিজানুর রহমান ওরফে তারেক ও মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ওরফে সোহাগ মেম্বার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন। পরবর্তী সময় ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুজনসহ ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৮ আসামি। এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে জামাল উদ্দিন, আব্দুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক নামের চার আসামি।
পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক উৎপল চৌধুরীর কাছে ১০০ পাতার ধর্ষণ ও ৩৩২ পাতার নির্যাতন মামলার চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। পলাতক চার আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে ৩৭ বছরের নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর এলাকার দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা। তারা ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখেন। পরে ওই নারীকে তারা আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তারা ধারণ করা ভিডিওচিত্র ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে।
পরে ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় পুলিশ একটি বাসা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে। ওই রাতেই তিনি বাদী হয়ে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান সহযোগী নুর হোসেন ওরফে বাদলসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও সাত থেকে আটজনকে আসামি থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।