এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ ও আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিকভাবে স্থাপনে সম্মত হলো মরক্কো। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হতে যাচ্ছে।
আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় বিতর্কিত পশ্চিম সাহারা অঞ্চল নিয়ে মরক্কোর দাবিকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ নিয়ে গত চার মাসে চারটি আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল। এর আগে মিসর ও জর্ডান ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। এরপর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সুদান।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ঘোষণা দেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হয়েছে মরক্কো।
তিনি বলেন, ‘আরেকটি যুগান্তকারী অর্জন হলো। আমাদের দুই মহান বন্ধু ইসরায়েল এবং কিংডম অব মরক্কো পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি অর্জনের জন্য এটি বিশাল অগ্রগতি।’
হোয়াইট হাউস জানায়, ট্রাম্প এবং মরক্কোর বাদশাহ ষষ্ঠ মোহাম্মদ সম্মত হয়েছেন যে, ইসরায়েলের সঙ্গে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে মরক্কো এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা প্রসারিত করবে।
এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মরক্কোর বাদশাহ। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার ফোনালাপ হয়েছে। ‘সামান্য দেরি হলেও’ মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক করেছে বলে ষষ্ঠ মোহাম্মদ জানান।
ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির বিনিময়ে বিতর্কিত পশ্চিম সাহারা নিয়ে নিজেদের দাবির স্বীকৃতি পাচ্ছে মরক্কো। এক দশক ধরে ওই অঞ্চলে আলজেরিয়া সমর্থিত পোলিসারিও ফ্রন্টের সঙ্গে লড়াই করে আসছে দেশটি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মরক্কোকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি আরব দেশটির ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ বলে আখ্যা দেন।
এদিকে মরক্কোর এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিন সরকার। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নির্বাহী কমিটির সদস্য বাসাম আস-সালহি বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো আরব রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপন অগ্রহণযোগ্য। এটি ইসরায়েলি আগ্রাসন বৃদ্ধিকে সমর্থন দেয়া এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে অস্বীকার করা।’
একইভাবে গাজার হামাস সরকারের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, ‘এটি অপরাধ। এটি কোনোভাবে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে না। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রত্যেকটি চুক্তি ব্যবহার করে ইসরায়েল তাদের দখলদারি বাড়াবে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাবে।’