ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পেয়ে কারাগারে থাকা আসামির সঙ্গে ভুক্তভোগীর সম্মতিতে কারাফটকেই বিয়ে অনুষ্ঠানের পর গোদাগাড়ি উপজেলার দিলীপ খালকোকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে জামিনের অপব্যবহার হলে তা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথ খালকোর ছেলে দিলীপ খালকোর সঙ্গে তার খালাতো বোনের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এর সূত্র ধরে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় অভিযুক্ত দিলীপ। এর কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। তবে পরবর্তী সময়ে দিলীপ খালকো তাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় এ নিয়ে সালিশের মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ হয়। শেষ পর্যন্ত সালিশের মাধ্যমে কোনও সুরাহা না হওয়ায় ভুক্তভোগী ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে পরীক্ষা করে সন্তানসম্ভবা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন।
এর পর ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় দিলীপ খালকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী নারী। এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর পর বিচার শেষে ২০১২ সালের ১২ জুন দিলীপ খালকোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভুক্তভোগী ধর্ষণের শিকার হন তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।
২০১২ সালের ওই রায়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত দিলীপ কারাগারেই আছে। সম্প্রতি কারাগারে থেকেই দিলীপ হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন জানায় সে। আবেদনটির ওপর শুনানিকালে দিলীপের আইনজীবী হাইকোর্টকে জানান, ভুক্তভোগী নারী আদালতে হাজির হয়েছেন। তারা বিয়ে করতে সম্মত হয়েছেন। জামিন পেলে তাদের মধ্যে বিয়ে হবে। এ অবস্থায় হাইকোর্ট কারাফটকে তাদের বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহীর কারা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। সে নির্দেশনা মেনে আসামির সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়।