এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। বাকি আছে সর্বশেষ স্প্যান। ৪১তম স্প্যান (২-এফ) বসবে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের ওপর। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হবে আজ বুধবার (৯ ডিসেম্বর) থেকে। এটির মধ্য দিয়ে সবগুলো স্প্যান বসানো সম্পন্ন হবে। দৃশ্যমান হবে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ধূসর রঙের স্প্যানটি বুধবার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই-তে করে কাঙ্ক্ষিত পিয়ারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের।
তিনি জানান, নানামুখী চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে সব স্প্যান বসানো শেষ হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। তবে, চীনা ঠিকাদার কোম্পানি নিজেদের নিয়মে ছোট একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সেই হিসেবে ৩ বছর ২ মাস ১০ দিনে বসানো হচ্ছে সেতুর সব কয়টি স্প্যান। বন্যা, নদী ভাঙন, চ্যানেলে নাব্যসংকট, করোনা ভাইরাস মহামারিসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে একে একে ৪০টি স্প্যান বসানো হয়। গত ৪ ডিসেম্বর বসে ৪০তম স্প্যান।
মূল সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ২৮৫টি এবং ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৯৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে ৩১০টি স্থাপন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ। মূল সেতু কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ ভাগ। নদীশাসন কাজের চুক্তিমূল্য ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।
সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার খাত, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাত, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট ও আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ ৭ হাজার ৭১৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা।
প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক ০২ কোটি টাকা; অর্থাৎ ৭৯ দশমিক ৮৯ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৫০ ভাগ।