কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধিতার বিপক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি। কমিটি এ ঘটনায় ইন্ধনদাতা ও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশ করে।
আজ রোববার (৬ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, এ বি তাজুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশ নেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভাস্কর্যকে ইস্যু করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামের নামে খুন, নারী ধর্ষণ, ২০১৩ সালে আন্দোলনের নামে কুরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলা ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ও ভাস্কর্য নির্মাণে বিরোধিতা একই সূত্রে গাঁথা।
সংসদীয় কমিটি বলছে, ‘জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সব চক্রান্ত প্রতিহত করার কথা বলেছি। আমাদের এ বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। যারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবে হবে।’
এদিকে বৈঠকে রাজাকারদের তালিকা তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত সাব কমিটির প্রধান শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ সংসদের উপজেলা পর্যায়ের সদ্য সাবেক কমান্ডারকে আহ্বায়ক করে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জীবিত কমান্ডারদের নিয়ে রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়েছি। মন্ত্রণালয় এ কমিটি গঠনের জন্য সব জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেবে।’
৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই-বাছাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগই আওয়ামী ঘরনার। ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি ২০০৫ সালের মতো তাদের মনভাবাপন্ন অনেককে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এদের বেশিরভাগই ছিল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। পিস কমিটির নেতাদেরও তখন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার কারণে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে যাচাই-বাছাই হচ্ছে।”
এদিকে সংসদ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করে কমিটি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে বিভিন্ন ওয়াজ ও কুষ্টিয়াতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাঙার ন্যক্কারজনক ঘটনায় কমিটির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।