বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে প্রতিকূল আবহাওয়া অনেকাংশে দায়ী।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানিয়েছে, আমদানি করতে হয় এমন খাদ্যপণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বিশ্বের ৪৫টি দেশ, যাদের প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়, দাম বাড়ার কারণে তারা চাপে পড়েছে। খবর এএফপির
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মূল্যসূচক গত নভেম্বর মাসে গড়ে ১০৫ পয়েন্ট ছিল, যা অক্টোবরের চেয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি এবং গত বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের পর খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার এটিই সর্বোচ্চ সূচক।
খাদ্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সবজি ও ভোজ্য তেলের। পামওয়েল তেলের মজুদ না থাকায় এর দাম ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য যেমন চাল, গম ও আটার দাম অক্টোবরের চেয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত বছরের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।
এফএও জানিয়েছে, আমেরিকা, ইউক্রেন ও আর্জেন্টিনায় গমের আবাদ কম হওয়ায় পণ্যটির দাম বেড়েছে। গমের দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হলো চীনের মজুদ। দেশটি একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে গম কিনে রাখে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং থাইল্যান্ডে খারাপ আবহাওয়া এবং চীনে উৎপাদন কম হওয়ার কারণেও গমের দাম ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে, ইউরোপে বিক্রি বাড়ার কারণে কিছু অংশে দুধের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। মাংসের দামও শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে করোনা মহামারিতে যাদের বেতন কমেছে তারা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন। এর ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মহামারি ছাড়াও মধ্য আমেরিকায় সাম্প্রতিক হ্যারিকেন এবং আফ্রিকায় বন্যা, কীটপতঙ্গের আক্রমণ, বিরূপ আবহাওয়া এবং দ্বন্দ্ব সংঘাতের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খাদ্য উৎপাদনে। ফলে আফ্রিকার ৩৪টিসহ মোট ৪৫টি দেশকে অতিরিক্তি খাদ্য আমদানি করতে হতে পারে।