রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে শুধু বাংলাদেশই নয়, মিয়ানমারের দিকেও নজর দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ‘রোহিঙ্গা সমস্যার তূলনামূলক চিত্র’ শীর্ষক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে, একই রকম সহায়তা মিয়ানমারে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের রক্ষা এবং বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য দেওয়া উচিত।’
প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোও অস্থিতিশীল হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানবিক সহায়তা সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে। কিন্তু এটি সমস্যা সমাধানে সহায়ক নয়।’
ভূ-রাজনীতি, অর্থনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থকে আপাত দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রাধান্য দিচ্ছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, মিয়ানমারকে প্রভাবিত করার সক্ষমতা যেসব দেশের আছে, হয় তারা সেটি ব্যবহার করতে চাইছে না, অথবা তারা মিয়ানমারকে তোয়াজ করার নীতি অনুসরণ করছে। এটি অবশ্যই বন্ধ হতে হবে।’
তোয়াজ করার নীতি মিয়ানমারকে আরও সাহসী করে তুলছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, প্রত্যাবাসন ও স্থায়ী সমাধানের চেয়ে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবিক সহায়তা দিতে বেশি আগ্রহী।’
প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ তৈরি, কিন্তু মিয়ানমারের অনাগ্রহে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে তিনি জানান।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে একটি আন্তর্জাতিক বেসামরিক নজরদারি দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য পররাষ্ট্র সচিব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সে দেশের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘মিয়ানমারে নির্বাচনের পর আমরা আশা করি, নতুন করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।’