রিপোর্টার
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : আগামীকাল শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারের ওপর ৪০তম স্প্যান বসবে। ইতোমধ্যে স্প্যানটিকে দুই পিলারের কাছে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই তে রাখা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার স্প্যানটিকে দুই পিয়ারের ওপর স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে সেতুর ছয় কিলোমিটার। এরপর বাকি থাকবে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি মাত্র স্প্যান বসানোর কাজ। ৩৯ তম স্প্যান বসানোর ৭ দিনের মাথায় শুরু হয়েছে এ স্প্যানটি বসানোর কার্যক্রম। আর বিজয়ের মাসে সেতুতে স্প্যান বসানোর কাজটি সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে প্রমত্তা পদ্মা জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে আর কারিগরি জটিলতা দেখা না দিলে আগামীকাল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্প্যানটি স্থাপন করা সম্ভব হবে। পদ্মা সেতুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর এ খবর নিশ্চিত করেছেন। অক্টোবর মাসে চারটি স্প্যান ও নভেম্বর মাসেও চারটি স্প্যান বসানো সম্ভব হয়েছে। এ মাসে টার্গেট অনুযায়ী দুইটি স্প্যান স্থাপনের পরিকল্পনা প্রকৌশলীদের।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৪০তম স্প্যানকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন হাজার ৬০০ টন ধারন ক্ষমতার ভাসমান ক্রেনটি প্রায় ৩০ মিনিট সময় নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারের কাছে পৌঁছায়। এরপর শুরু হয় ভাসমান ক্রেনটির নোঙর করার কাজ।
প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবার দুপুর ২টার আগেই এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। অন্যদিকে, ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ৪১ তম স্প্যান (২-এফ) বসবে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের ওপর। এমন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। আর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বসানো হয়েছিল প্রথম স্প্যানটি। এরপর ধাপে ধাপে স্প্যান বসিয়ে এ পর্যন্ত ৩৯টি স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুর মোট পিলার ৪২টি এবং এতে স্প্যান বসবে ৪১টি। জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে স্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজও চলমান আছে। সেতুতে প্রয়োজন হবে দুই হাজার ২৯১৭টি রোডস্ল্যাব। এর মধ্যে নভেম্বর পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ২৩৯টির বেশি স্ল্যাব। রেলওয়ের জন্য প্রয়োজন হবে দুই হাজার ৯৫৯টি রেলস্ল্যাব। এ পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৮৬০টির বেশি স্ল্যাব। ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
এই বিভাগের আরো সংবাদ