নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় মশক নিধনে চিরুনি অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী সোমবার (২ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে ১০ দিনব্যাপী চলবে এই অভিযান।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সাথে অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকে বিশেষ মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম তথা চিরুনি অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, নগরবাসীকে মশা থেকে সুরক্ষা দিতে এবং সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিরুনি অভিযান পরিচালনার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিরুনি অভিযানের পাশাপাশি মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হবে।
জরুরি সভায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত যে সব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী রয়েছে সেই সব হাসপাতালের আশেপাশে নিবিড়ভাবে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী থেকে এডিস মশার মাধ্যমে সংক্রমণ যাতে না ঘটে সেজন্য মেয়র এই নির্দেশ দেন। এছাড়া হাসপাতালে অবস্থানরত ডেঙ্গু রোগীদের ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের বাসার আশেপাশে মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
মেয়র বলেন, যে কোনো মূল্যে নগরবাসীকে মশা এবং মশাবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে হবে। এ জন্য আমরা চতুর্থ প্রজন্মের কীটনাশক আমদানি করেছি। ইতিমধ্যে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে এবং আরো আনা হচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এ মুহূর্তে ডিএনসিসি এলাকায় ১২ জন ডেঙ্গু রোগী আছে। ডিএনসিসি এলাকার পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতালে এ সকল ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ইতোমধ্যে এই ১২ জন রোগীর ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বাসার আশেপাশে মশার কীটনাশক প্রয়োগ জোরদার করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা যে সব হাসপাতালে অবস্থান করছেন সে সব হাসপাতালের আশেপাশেও মশার কীটনাশক প্রয়োগ জোরদার করা হচ্ছে। এছাড়া ডিএনসিসির নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মাতৃসদনগুলোতে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট রয়েছে বলে সিটি কর্পোরেশন থেকে আশ্বস্ত করা হয়।
গত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে তিনটি চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়। চিরুনি অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য একটি অ্যাপসে সংরক্ষণ করা হয়। অ্যাপসে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী মশার কীটনাশক প্রয়োগ জোরদার করা হয়েছে। এ সব স্থানে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে আনা চতুর্থ প্রজন্মের কীটনাশক নোভালিউরন প্রয়োগ করা হচ্ছে। এছাড়া ডিএনসিসির সর্বত্র নিয়মিত লার্ভিসাইডিং (মশার ডিম ও লার্ভা নিধনের কীটনাশক) ও এডাল্টিসাইডিং (উড়ন্ত মশা নিধনের কীটনাশক) অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করে সংস্থাটি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, কারা মহাপরিদর্শক ও ডিএনসিসির সাবেক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মোস্তফা সারোয়ার এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।