1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন

সেই অবন্তিকার প্রয়াত বাবাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন, বিস্মিত মা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫

২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মারা যান অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন। প্রয়াত এই শিক্ষককে গতকাল মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের একটি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (মাউশি)। তিনি গত বছরের ১৫ মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) বাবা।

প্রায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের খবরে বিস্মিত হয়েছেন কুমিল্লায় বসবাসরত তাহমিনা বেগম। আজ বুধবার সকালে তিনি বলেন, ‘আমার প্রাপ্তিগুলো কবরে। আমার স্বামী অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। তিনি জানতেন অধ্যক্ষ হবেন, কিন্তু সেই অধ্যক্ষের প্রজ্ঞাপন পেলেন মৃত্যুর দুই বছর পর।’

মাউশির সরকারি কলেজ-২ শাখার উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৩৭ জন অধ্যাপককে বিভিন্ন কলেজে পদায়ন করা হয়। পদায়নকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অবন্তিকার বাবা মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে কুড়িগ্রামের মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। ৩৭ জন শিক্ষকের ওই তালিকায় ১৩ নম্বরে ছিলেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন।

মৃত্যুর আগপর্যন্ত মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল জামাল উদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন।’

এ বিষয়ে জানতে আজ সকালে মাউশির সরকারি কলেজ-২ শাখার উপসচিব মো. মাহবুব আলমের দাপ্তরিক নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তালিকা প্রকাশের পরই প্রজ্ঞাপনটি হাতে আসে জানিয়ে অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জীবনে কাউকে তোষামোদি, তদবির করেননি। অনেক আগেই অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেও অধ্যক্ষ পদে তাঁর পদায়ন হয়নি। এটা তাঁর জন্য দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। মৃত্যুর দুই বছর পর অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হলো, কিন্তু তিনি তো দেখে যেতে পারলেন না।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার দেড় থেকে দুই মাস পর একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পদোন্নতির বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি বলেছিলেন, যাঁর পদোন্নতির জন্য তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে, তিনি মারা গেছেন।

এই মা বলেন, ‘গত বছরের ১৯ মে অবন্তিকার স্নাতকের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে মেয়ে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৫ পেয়ে আইন বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল। মেয়ে সেটি দেখে যেতে পারেনি। যাদের কারণে মেয়েকে অকালে মরতে হয়েছে, তাদের এখনো বিচার হয়নি। এই যন্ত্রণা সহ্য হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় যারা জড়িত, আমি তাদের বিচার চাই। এটাই এখন আমার একমাত্র চাওয়া।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৫ মার্চ রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। সেই ফেসবুক পোস্টে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর (সাময়িক বরখাস্ত) দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ করেন। এতে আত্মহত্যার প্ররোচণার প্রাথমিক সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় অবন্তিকার মায়ের করা মামলায়। বর্তমানে দুই আসামিই জামিনে মুক্ত।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি