1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চীন বাদে সব দেশের ওপর নতুন শুল্ক স্থগিত করলেন ট্রাম্প শুল্ক আরোপের পর বিশ্বনেতারা আমার পশ্চাদ্দেশে চুমু খাচ্ছেন: ট্রাম্প ২০০ বিনিয়োগকারীসহ বাংলাদেশে আসছেন চীনা বাণিজ্য মন্ত্রী, অর্থনীতির নতুন দিগন্ত নির্বাচিত সরকারের ওপরই বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেশি থাকে: আমীর খসরু গাজায় গণগত্যার প্রতিবাদে গৌরীপুরে বিক্ষোভ ত্রিশালে যাত্রীবাহী বাস থেকে ভারতীয় মদ উদ্ধার করল পুলিশ যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪ শতাংশের পাল্টায় ৮৪ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা চীনের নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বিএনপি বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত মুজিববর্ষ পালনে রাষ্ট্রের চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়, অনুসন্ধানে দুদক

যে কারণে চীনে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

আগামী সপ্তাহে চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে বেইজিং তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিতে যাচ্ছে বলে বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলার মধ্যে চীনের কাছ থেকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে চায় ইউনূস সরকার। আর এ সফরে এ বিষয়টিই গুরুত্ব পাবে।

ড. ইউনূস আগামী ২৭ মার্চ হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরামের প্রারম্ভিক অধিবেশনে যোগ দেবেন। এর পরের দিন ২৮ মার্চ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে তার। এরপর তিনি মর্যাদাপূর্ণ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দেবেন। সেখানে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হবে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ড. ইউনূস এমন সময় চীনে যাচ্ছেন যখন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা ভালো নেই। হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ এবং সর্বশেষ মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের ‘ভারতের সুরে’ বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্কে আরও প্রভাব ফেলেছে।

তবে ড. ইউনূসের এ চীন সফরটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক বৈধতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

চীনের কাছ থেকে কী প্রতিশ্রুতি আনবেন ড. ইউনূস এবং কী প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসবেন?

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ড. ইউনূস ও চীনা কর্মকর্তাদের মধ্যে যে বৈঠক হবে সেটির অন্যতম বড় এজেন্ডা থাকবে চীনের বিনিয়োগ নিশ্চিত করা।

চীন ২০০৬ সালে ভারতকে টপকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়। এরমধ্যে গত বছর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। যারমধ্যে চীনের রপ্তানিই ছিল ২২ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া ২০১৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভে যোগ দেয়। এরপর থেকে চীনের কাছ থেকে অনেক বড় প্রজেক্টে বিনিয়োগ পেয়েছে ঢাকা।

এছাড়া চীনের রাষ্ট্রয়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে একাধিক রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ প্রজেক্টে কাজ করেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং কর্ণফুলী টানেলের কাজ করেছে তারা। মোংলা বন্দর সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ এখন চীনের কাছ থেকে বিনিয়োগ চাইছে।;

গত বছর ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালান সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর চীন বাংলাদেশে থাকা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। যারমধ্যে আছে ৫ বিলিয়ন অপরিশোধিত ঋণ।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেয়ারব্যাংক সেন্টারের চীনা স্টাডিজের অনাবাসিক সহযোগী আনু আনোয়ার বলেছেন, ড. ইউনূস চীনকে আশ্বস্ত করবেন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে।

আনু আনোয়ারের মতে, অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে যেহেতু ড. ইউনূস ইতিমধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছেন। তাই চীনকে তার আশ্বস্ত করতে হবে যে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তারা তার সরকারকে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে ভাবতে পারে। তবে চীন হয়তবা সতর্কতার সঙ্গে এগোতে পারে। তারা ড. ইউনূসকে কিছু ক্ষেত্রে আশ্বাস দিলেও সামনের নির্বাচিত সরকারের জন্য বেশিরভাগই রেখে দিতে পারে।

ড. ইউনূস কী চাইবেন

চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া স্টাডিস সেন্টারের উপপরিচালক লিন মিনওয়াং বলেছেন, পতনের এক মাস আগে শেখ হাসিনা চীনে গিয়েছিলেন। ওই সময় বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে ২০টি সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যারমধ্যে চীন বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ইউয়ান সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ড. ইউনূস তার সফরে হাসিনার করে আসা এই চুক্তিগুলোর কিছু চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন লিন মিনওয়াং।

তিনি বলেন, “(হাসিনার পতনের) পর অনেক সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড থমকে ছিল। আমি মনে করি এগুলো এখন শুরু করার সময় এসেছে।”

শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে দেয় বেইজিং। তাকে ভারতপন্থি হিসেবে দেখা হতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর লাইলুফার ইয়াসমিন সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেছেন, ড. ইউনূসের চীন সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি যৌথ নদী রয়েছে। যেগুলোর বেশিরভাগের উৎপত্তি ভারতে। আর এ বিষয়টি কাজে লাগিয়ে সীমান্ত আলোচনায় সুবিধা আদায় করে নিয়েছে নয়াদিল্লি। কিন্তু ২০১৬ সালে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও পুনরুত্থান প্রজেক্টের ঋণের জন্য চীনের দারস্থ হয় বাংলাদেশ। যা পরবর্তীতে দিল্লিতে সতর্কতার সৃষ্টি করে।

এরপর থেকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি। যদিও এই প্রকল্পে ভারতকে সহায়তা করতে একাধিকবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। কিন্তু ভারত জানিয়েছে, এই প্রকল্পের কাজ তারাই করবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় চীন ও ভারতের মধ্যে যে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে এই প্রকল্পটি সেটির একটি বড় উদাহরণ। এ নিয়ে দুই দেশই বাংলাদেশের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেছেন, “তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হলে এটি শুধুমাত্র টেকনিক্যাল অথবা আর্থিক বিষয় হবে না। এটি হবে একটি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”

তিনি আরও বলেছেন, “তিস্তা প্রকল্প ছিল বাংলাদেশ-ভারত-চীনের ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি অন্যতম বিষয়। যা নিয়ে বড় মতানৈক্য ছিল। এবার যদি এ বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক কিছু হয়। তাহলে এই অঞ্চলে নিজেদের কৌশলগত স্বাধীনতা প্রমাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন হবে।”

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি