1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন: প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল ভারত

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫

জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু জ্বালাময়ী এক ভাষণে তাঁর দেশে মোতায়েন ভারতীয় সেনাদের বহিষ্কারের অঙ্গীকার করেন। চীনের প্রতি বন্ধুবৎসল মুইজ্জু বেইজিংয়ের সঙ্গে একটি সামরিক সহায়তা চুক্তি সইয়েরও আগ্রহ দেখান। উল্লেখ্য, দেশটি ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী।

এ ঘটনার পর গত বছরের (২০২৪) জানুয়ারির মধ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) আদেশে কিছু প্রতিনিধি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় তাঁর দেশের বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে গোপনে আলাপ–আলোচনা শুরু করেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়। আলোচনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ মুইজ্জুকে এভাবে সরানোর উদ্যোগের ওপর ‘ডেমোক্রেটিক রিনিউয়াল ইনিশিয়েটিভ’ শিরোনামের একটি অভ্যন্তরীণ নথি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে এসেছে।

নথির তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করার উদ্দেশ্য হাসিল করতে বিরোধী ওই রাজনীতিবিদেরা পার্লামেন্টের ৪০ সদস্যকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন মুইজ্জুর নিজ দলের কিছু সদস্যও। তাঁকে অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ১০ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী তিনটি অপরাধী চক্রকে অর্থ দেওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া যায় এ নথিতে।

কয়েক মাস গোপন আলোচনা চলার পর ষড়যন্ত্রকারীরা প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে অভিশংসন করার পক্ষে যথেষ্ট–সংখ্যক ভোট (প্রয়োজনীয় পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন) আদায়ে ব্যর্থ হন। এতে ভারত তাঁকে উৎখাত করার চেষ্টা বা এ খাতে অর্থায়ন করার ব্যাপারে আর এগোয়নি।

এসব পক্ষকে অর্থ পরিশোধে ষড়যন্ত্রকারীরা ৮ কোটি ৭০ লাখ রুপিয়া (মালদ্বীপের মুদ্রা) বা ৬০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা চান। আলোচনা সম্পর্কে অবগত মালদ্বীপের দুজন কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, ভারতের কাছে চাওয়া হয়েছিল এ অর্থ।

মালদ্বীপকে নিয়ে এ ষড়যন্ত্র এবং এর পেছনের গল্প ভারত ও চীনের বৃহত্তর পরিসরের প্রায়ই এক ছায়াযুদ্ধের বিরল চিত্রই এখন পর্যন্ত তুলে ধরে। দুই দেশের লড়াই মূলত এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও এর চারপাশের জলভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে। তাদের এ প্রতিযোগিতা, বিশেষ করে ভারত মহাসাগরীয় ছোট দেশটিকে ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে। এশিয়া মহাদেশের দুই বড় শক্তি ভারত ও চীন দেশটিতে উদার ঋণ, বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্প ও রাজনীতিক সমর্থনের (নিজেদের পছন্দের রাজনীতিবিদদের প্রকাশ্যে ও গোপনে) প্রস্তাব দিচ্ছে।

চীনের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়াদিল্লিকে তার দীর্ঘদিনের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ততাকে শাণিত করেছে। কয়েক দশক ধরে এশিয়াজুড়ে মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে সমর্থন জুগিয়েছে ভারত। এই সহায়তা ও সমর্থনের উদ্দেশ্য ছিল, এমন সব নেতা তৈরি করা, যাঁরা নয়াদিল্লির পাশে থাকবেন। তবু দেশগুলোতে ভারত প্রায়ই গণতান্ত্রিক আদর্শের বিরোধিতা করেছে ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত (বর্তমানে ক্রমেই চীনমুখী হওয়া) নির্বাচিত নেতাদের ভীষণভাবে অবমূল্যায়ন করে স্থানীয় অসন্তোষ উসকে দিয়েছে।

ভারতের দক্ষিণে ১ হাজার ২০০ দ্বীপ নিয়ে গঠিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালদ্বীপের জনসংখ্যা মাত্র ৫ লাখ। গত ১০ বছরে এশিয়ায় ভারতের প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে দেশটি।

মালদ্বীপ–সম্পর্কিত বিষয়ে একসময়ে কাজ করেছেন গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’–এর সাবেক প্রধান হরমিস থারাকান। তিনি বলেন, মালদ্বীপে একটা অবস্থান গড়তে পারলে সেটি ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরের এক বড় অংশে (প্রভাব বিস্তারের) সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে—তা ভারত, চীন যে কারও জন্যই। অবশ্য তিনি এ–ও বলেন, মালদ্বীপের মতো নিকটতম প্রতিবেশীদের সঙ্গে একটা দৃঢ় ও স্থিতিশীল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করাটা ভারতের জন্য অপরিহার্য।

এ প্রতিবেদনের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চায় দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। তবে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

আবার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর যোগাযোগমন্ত্রী ইব্রাহিম খলিলও।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি