1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫২ অপরাহ্ন

গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না: জামায়াত আমির

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করেছে, নির্মম অত্যাচার করেছে তারা রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তারা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার। তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিবিরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমির বলেন, সত্যের পথে থাকতে হবে। কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করা যাবে না। শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে কাজ শুরু করতে হবে। যারা দেশকে ভালোবাসে, তাদেরকে সঙ্গে রেখে কাজ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত করতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হতে দেওয়া হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঠিক না হলে জাতি আবার পথ হারাবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্রসমাজ কখনও দুঃশাসন আর দুর্নীতিকে পরোয়া করে না। এজন্যই দফায় দফায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে।

জামায়াত আমির বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব পাশের দেশের হাতে তুলে দিয়েছিল শেখ হাসিনা। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা তাদের মাথা ভারতের কাছে বর্গা দিয়ে রেখেছে। আওয়ামী লীগের আমলে দেশে যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার বিচার বাংলার মানুষ দেখতে চায়।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, সাড়ে ১৫ বছর রাজনীতির প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যারা যুদ্ধে নেমেছিল, সেই যুদ্ধের পরাজিত শক্তি আজ দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। আমার কলিজার টুকরা সন্তানেরা ‘২৪ এর জুলাই থেকে একটি ন্যায্য ও নাগরিক দাবির জন্য আন্দোলনে নেমেছিল, কিন্তু সেই পুরোনো কায়দায় হেলমেট বাহিনী, হাতুড়ি বাহিনীকে পাঠিয়ে দিয়ে সরকারি সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে সে আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিল।’

জামায়াত আমির বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের কথা জাতি কখনো ভুলবে না। ফ্যাসিস্ট নেত্রী লগি-বৈঠা নিয়ে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলে যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার বিচার বাংলার মানুষ দেখতে চায়।

ক্যাম্পাসে আর কোনো আধিপত্যবাদের স্থান হবে না জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছিল। চরদখলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল করা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও আধিপত্যবাদী বজায় রাখতে ক্যাম্পাসগুলোকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থার কবর রচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, আধিপত্যবাদ ও দখলবাজের স্থান হবে না।’

শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হওয়া রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ আলী রায়হানের বাবা মো. মুসলেহ উদ্দিন।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসেন বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ কোনো দুঃশাসন মেনে নেয় না সেটা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রমাণিত হয়েছে। স্বাধীনতার সাফল্যকে হাইজ্যাক করে একটা রাজনৈতিক দল দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে রেখেছিল। কিন্তু ছাত্রসমাজ ১৫ বছরের মাথায় তাদের সেই দুঃশাসনকে পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা করেছে। বাংলাদেশে আর কোনো আধিপত্যবাদ ও দুঃশাসন এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।

সমাপনী বক্তব্যে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এদেশের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার জন্য ছাত্রশিবিরকে সব ভয় উপেক্ষা করে ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। ছাত্রশিবির চব্বিশের আন্দোলনে যেভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে আগামীতেও যেকোনো আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

উদ্বোধন ঘোষণাকালে জুলাই বিপ্লবে হওয়া শহীদ আবু সাঈদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, ওয়াসিম, উসমানসহ শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী আমলের অত্যাচারে আহত ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

আরও ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দ। বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি কাজী ইবরাহীম, বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ মাওলানা যায়নুল আবেদীন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শামছুল আলম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠন সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

বিদেশি মেহমানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনাদোলু গেঞ্জলিক দেরনেই-এর সহ-সভাপতি এমরুল্লাহ ডেমির, পেরসাতুয়ান কেবাংসান পেলাযার ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি জুল আইমান, হিকমত ইয়ুথ মিশরের সভাপতি ড. আবদুল্লাহ আহমেদ, ইসলামী বিশ্ব যুব ফোরামের সভাপতি ড. আশরাফ আওয়াদ, আংকাতান বেলিয়া ইসলাম মালয়েশিয়ার সভাপতি আহমদ ফাহমি মোহাম্মদ সামসুদিন।

ছাত্র নেত্ববৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের (ববি হাজ্জাজ) সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েলসহ বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি