জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে ডুবে মো.আফিফ আহম্মেদ (১৫), রাহি মিয়া (১৫) ও রৌশন (১৭) নামে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে অস্বাভাবিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তে পরে ওই তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিহত তিনজন মামাতো-ফুপাতো ভাই বলে জানা গেছে।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে পৌর শহরের ছনকান্দা এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদে পরে তিন ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
নিহত আফিফ আহাম্মেদ পৌর শহরের ছনকান্দা এলাকার মো.আহামিদুর রহমানের ছেলে ও জামালপুর জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষাথী, রাহি মিয়া একই এলাকার এজাদ মিয়ার ছেলে ও দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী। অপরদিকে রৌশন একই এলাকার রাজা মিয়ার ছেলে ও ঢাকার পিপারেটরী স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর শেষে স্কুল ছুটি। ছুটিতে নানা বাড়িতে বেড়াতে আসেন রৌশন। দুপুরের দিকে দুই মামাতো ভাই আফিফ ও রাহিসহ স্থানীয় বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ফুটবল খেলতে যান। খেলা শেষে সবাই মিলে নদীতে গোসল করতে নামে। গোসল করতে গিয়ে পাঁচজন পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। এ সময় তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে দুইজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। অনেক খোঁজাখুজি করেও ওই তিনজনকে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেন। একই বাড়ির তিন ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকা শোকের মাতম চলছে।
স্বজনদের অভিযোগ, ছনকান্দা এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। ড্রেজার মেশিনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে অস্বাভাবিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তের পানিতে ডুবেই ওই তিনজন মারা গেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
জামালপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপি অভিযান চালিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি বলেন, এ ঘটনায় তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। এ ছাড়াও শোকাহত স্বজনদের সহায়তা করার কথা জানিয়েছেন তিনি।