সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থাটি।
দামেস্কে বিদ্রোহীদের অগ্রগতি
বিদ্রোহী বাহিনী দাবি করেছে, তারা ইতোমধ্যে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বারজেহ এলাকায় বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেছে এবং সেখানে তীব্র লড়াই চলছে।
একজন বাসিন্দা সিএনএনকে জানিয়েছেন, “শহরে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই, ইন্টারনেট স্লো, এবং মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।” রয়টার্স আরও জানিয়েছে, তারা দুজনের সঙ্গে কথা বলেছে যারা গুলির শব্দ শুনেছেন। তবে এ শব্দ কোন দিক থেকে আসছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিদ্রোহীদের বিজয়রথ
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে দামেস্কের উত্তরে অবস্থিত হোমস শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং রাজধানী ঘেরাও করে ফেলেছে। প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এইচটিএস-এর অভিযানে সিরিয়ার একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে চলে যায়।
সরকারি বাহিনীর ভেঙে পড়া
যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচএস) জানিয়েছে, সরকারি বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়েছে। শতাধিক সেনা সদস্য তাদের সামরিক ইউনিফর্ম খুলে ফেলেছেন। তাদের বলা হয়েছে, সরকার পতনের কারণে তারা চাকরি হারিয়েছেন।
আসাদের গোপন প্রস্থানের
দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ উড়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সূত্র। ধারণা করা হচ্ছে, এই উড়োজাহাজে করেই বাশার আল-আসাদ এবং তার ঘনিষ্ঠরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
সিরিয়ায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের এক অস্থিতিশীল অধ্যায়ের শেষে এসে বাশার আল-আসাদের ক্ষমতা হারানোর দৃশ্যপট এখন স্পষ্ট। বিদ্রোহীদের বিজয় এবং আসাদের সরকারের ভেঙে পড়ার মধ্য দিয়ে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নতুন এক অজানা পথে যাত্রা শুরু করেছে।