1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের আরও ৪৪ জন সীমান্তরক্ষী পালিয়ে এলেন বাংলাদেশে

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৪৪ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

আজ বেলা আড়াইটার দিকে বিজিপির আহত সদস্যসহ ৪৪ জন সীমান্ত অতিক্রম করে এপারে এসে আশ্রয় নেন বলে বিজিবির একটি সূত্র জানিয়েছে। এ নিয়ে মোট ৫৮ জন বিজিপির সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেন।

আজ সকালে ১৪ জন বিজিপি সদস্য পালিয়ে এসে এপারে আশ্রয় নেন। তাঁদের অস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হেফাজতে আছে।

তবে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেছেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তুমব্রু রাইট ক্যাম্পে গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে। ওই ক্যাম্পের বিজিপির কিছু সদস্য বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সংখ্যা ৪০ জনের মতো হতে পারে শোনা গেছে। তবে নিশ্চিত করে এখনও বলা যাচ্ছে না।

ঘুমধুমের নারী সদস্য ফাতেমা বেগম জানিয়েছেন, তুমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসা ৬৬ জন বিজিপি সদস্যকে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পক্ষে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।

সীমান্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার পর থেকে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত তুমব্রু সীমান্তের ওপার থেকে তুমুল গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। পরে দুপুর ১২টার দিকে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী হেলিকপ্টারে করে আরাকান আর্মির ক্যাম্পে হামলা চালালে গোলাগুলির শব্দ কমে আসে।

সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি, মিয়ানমারের বাহিনীর সদস্যদের বিজিবির তুমব্রু সীমান্তচৌকিতে আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেছেন, সীমান্তে বিজিবি ও পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে।

তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুল করিম, সৈয়দুর রহমান জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হওয়ার পর থেকে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন। এভাবে তুমব্রু, কোনারপাড়া, ভাজাবনিয়া ও বাইশফাঁড়ি সীমান্তের শত শত পরিবার কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অথবা যে যেভাবে পেরেছেন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত রাতে গোলা এসে পড়ায় বাইশফাঁড়ির একটি ঘরে আগুন ধরে যায়। আরও কয়েকটি বাড়িঘরে গুলি এসে পড়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলি হাতে বিদ্ধ হয়ে তুমব্রু ক্যাম্পপাড়ার বাসিন্দা প্রবীর চন্দ্র ধর আহত হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তার সমস্যায় থাকা পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। সীমান্তের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা বন্ধ রাখা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, যে এলাকা থেকে গোলাগুলির শব্দ আসছে, সেখানে বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্প এবং ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি অবস্থিত। এ দুই স্থাপনা ছাড়া আশপাশের প্রায় ৪৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিজিপির বাকি সব চৌকি আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। বাকি স্থাপনাগুলো দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে আরাকান আর্মির হামলা চলছে।

তুমব্রু ক্যাম্পপাড়ার বাসিন্দারা সীমান্তের ওপারের সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছেন, সীমানা খাল তুমব্রুর ওপর অবস্থিত মৈত্রী সেতু পার হলেই মিয়ানমারের বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্প। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি। এর চার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে তুমব্রু লেফট ক্যাম্প। বিজিপির এই তিন স্থাপনা মাসখানেক ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আরাকান আর্মি। বড় ধরনের আক্রমণে বিজিপি সদস্যরা টিকতে না পারলে জেলা শহর মংডু টাউনশিপের দিকে তাঁদের পশ্চাদপসরণের সুযোগ তেমন একটা নেই। এ ক্ষেত্রে তাঁরা বিকল্প হিসেবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি