শেষ মুহুর্তের প্রচার প্রচারণায় ভোটের মাঠ জমিয়ে আলোচনায় ময়মনসিংহের তিন নারী প্রার্থী। তাদের একজন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আর বাকি দুইজন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। উঠান বৈঠকসহ ব্যতিক্রমী প্রচারণায় তারা বেশ সাড়া ফেলেছেন। ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনে ৭২জন প্রার্থীর মধ্যে পাঁচ নারী থাকলেও দুইজন নেই প্রচারণায়। আর বাকি তিন নারী প্রার্থীকে নিয়ে চ্যালেঞ্জে পড়েছেন অন্য প্রার্থীরা।
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) নৌকা প্রতীক পেয়ে শুরুতেই চমক দেখানো উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলুফার আনজুম পপি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী প্রয়াত মাহবুবুল হক শাকিলের স্ত্রী। প্রচারণার শুরু হতেই নিলুফার আনজুম পপি ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার পক্ষে নারীদের ব্যাপক সাড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
অ্যাডভোকেট নিলুফার আনজুম পপি বলেন, আমি যখন নারী ভোটারদের কাছে যাই, তখন তারা আমাকে দেখার জন্য ছুটে আসেন। আমার সাথে কথা বলার জন্য কাছে এসে বসতে চান। জড়িয়ে ধরে কথা বলেন, আদর করেন। এটা অসম্ভব সাড়া। না দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না। তারা চাচ্ছেন যে তাদের একজন প্রতিনিধি যেন আসতে পারে। আমি আমার মতো চেষ্টা করছি, দেখা যাক ভোটযুদ্ধে কি হয়। গৌরীপুরের উন্নয়নের পাশাপাশি তরুণদের কর্মসংস্থান ও নারীদের এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কাজ করতে চাই। আমার বিশ্বাস এখানকার মানুষ বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গণমানুষের মার্কা নৌকাকেই বেছে নিবে।
একই আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তার করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নাজনীন আলম। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি নানাভাবে এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। নারী ভোটারদের সঙ্গেও রয়েছে তার সখ্যতা। তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নাজনীন আলম বলেন, নারীরা খুবই সহজ সরল। গ্রামের মা-বোনেরা একবার যে কথাটা দেয় সেই কথাটা রাখে। আমি নারী হিসেবে বেশি বেশি নারীদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছি এবং তাদের সাড়াও পেয়েছি বেশ। আমার সাথে তারা আছেন এবং আমাকে বেশ সহযোগিতা করছেন। আমার বিশ্বাস আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।
এদিকে ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনের সাথে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তারই বড় মেয়ে সেলিমা বেগম সালমা। পুরো উপজেলা জুড়ে সাড়ে তিনশোর মতো উঠান বৈঠক করে নৌকাকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন তিনি।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সেলিমা বেগম সালমার ভাষ্য, ফুলবাড়িয়ার মোট ভোটারের অর্ধেকই নারী ভোটার। আমি অনেক আগে থেকেই তাদের সাথে রয়েছি। ইতিমধ্যে ৩৫০ এর বেশি উঠান বৈঠক আমি করেছি। শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ আমার গ্রাম আমার শহর এই স্লোগানে ফুলবাড়িয়া কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। ভোটাররা তাকেই বেছে নেবে যাকে দিয়ে ফুলবাড়িয়ার উন্নয়ন হবে, যার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের সাথে ফুলবাড়িয়া তাল মেলাতে পারবে। বাবার সাথে প্রতিযোগিতা এটি একটি সুন্দর প্রতিযোগিতা। জনগণ যাকে বেছে নেবেন তিনিই আগামীতে এমপি হবেন।
ভোটের মাঠে তাদের ব্যাপক সাড়া দেখে খুশি নারী নেত্রীরাও। ভোটের মাঠে নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নারী ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখার কথা জানিয়ে আগামী নিবার্চনে নারী প্রার্থী বাড়ানো দাবিও তাদের। বিশিষ্ট নারী উদ্যেক্তা ও সংগঠক সৈয়দা সেলিমা আজাদ বলেন, ভোটের মাঠে নারী প্রার্থীরা যে সাড়া ফেলেছেন এটি আগামী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত চমকপ্রদ ও আশাব্যঞ্জক। এর মাধ্যমে আগামীতে নির্বাচনে নারীদের ভিত আরও মজবুদ হবে এবং রাজনৈতিকভাবে আরও সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।