অনুমতি ছাড়াই ময়মনসিংহ নগরীতে মিছিল করায় ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াতের ১৯ জন নেতাকর্মীকের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেলে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলে রিমান্ড শুনানি না হয়ে জামায়াত নেতাদের কারাগারে পাঠায় আদালত।
পুলিশ জানায়, গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যার পর নগরীর নতুন বাজার এলাকায় মিছিল করে মহানগর জামায়াত। অনুমতি চেয়ে মিছিলের অনুমতি না পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যার পর মিছিল বের করে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ওই সময় সরকারি বিরোধী স্লোগান দিয়ে রাস্তায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা, যানবাহন ভাংচুর করে নাশকতামূলক কাজ করছিলো বলে পুলিশ দাবি করে। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ ২৯ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। জামায়াতের সাত নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪০ জনকে আসামি করে ওই মামলাটি হয়।
ওই মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় রাতে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- জামায়াতে ইসলাম মুক্তাগাছা থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ মো. মুজাহিদ (৪৫), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক, ডা. আজহারুল ইসলাম শাহীন (৪৬), প্রচার সম্পাদক হাবিবুল হক শরীফ (৪০), সদস্য মো. মামুনুর রশিদ (৪৫), কোতোয়ালি থানা শাখার সভাপতি মাওলানা মো. মফিজুল ইসলাম (৫৫), সদস্য মাওলানা আবু নাছের সিদ্দিকী (৫২) ও মো. আনোয়ার হোসেন (৫০), গৌরীপুর থানা শাখার সদস্য আসাদুল্লাহ হাফেজ মো. কাজিম উদ্দিন (৫৫), ফুলপুর থানা শাখার সূরা সদস্য মো. আব্দুল কাদের (৫০), ঈশ্বরগঞ্জ থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদীন (৫১), সদস্য মো. ফজলুল হক ওরফে মাহবুব (৩৬), সরিষা ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক খান (৬৫), তারাকান্দা শাখার সহ সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম (৪০), সদস্য মাওলানা মতিউর রহমান (৫৩), ফুলবাড়িয়া থানা শাখার সদস্য মো. আ: মতিন (৩৫), সদস্য ইয়াকুব আলী হুজুর (৪৩), পাগলা থানা শাখার রুকন মাহমুদুল হাসান (৩০), ভালুকা থানা শাখার সদস্য মাওলানা মোবারক হোসাইন (১৯) ও মো. সাইফুল ইসলাম (৪০)।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, নাশকতার মামলায় ১৯ জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চলবে।
এর আগে, গত ২৫ জুলাই ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে ২৮ জুলাই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে পুলিশের নজর এড়িয়ে ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় নগরীর নতুন বাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে মহানগর জামায়াতে ইসলামির নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশেষ ময়মনসিংহে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছিল জামায়াতে ইসলামি। এরপর টানা ১০ বছর ধরে এই দলটি ময়মনসিংহে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করার সুয়োগ পায়নি।