ময়মনসিংহ নগরীতে মাহদী হাসান মৃধা (১০) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল রোড জামে মসজিদ হাফেজিয়া মাদ্রাসার চার তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় মাহদীর। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এটিকে দুর্ঘটনা বললেও তা মানতে নারাজ নিহতের পরিবার। পুলিশ বলছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহত মাহদী হাসান মৃধা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি এলাকার মানিক মৃধার ছেলে। দেড় বছর ধরে সে ওই মাদ্রাসাটিতে পড়াশোনা করছে এবং নাজেরা বিভাগের ছাত্র ছিল।
মাদ্রাসাটি থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, শনিবার (১৪ জুলাই) রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে মাহমুদুল হাসান নামে এক ছাত্রের সাথে চারতলা ছাদের বাথরুমের দিকে যায় মাদ্রাসা ছাত্র মাহদী হাসান মৃধা। পাঁচ মিনিট পর মাহদির সাথে থাকা ওই ছাত্রটি হন্তদন্ত হয়ে দৌঁড়ে বের হয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর ঐ ছেলে আবারও দৌঁড়ে ছাদে যায়। এরপর জানাজানি হয়, মাহদী হাসান ছাদ থেকে লাফিয়ে মারা গেছে।
ঘটনার সময় নিহত মাহদীর সাথে ওই ছাত্রের বরাত দিয়ে মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ আব্দুস সাত্তারের দাবি, ছাদে থাকা গণবাথরুমের দেয়ালের উপর দিয়ে পাশের একটি ভবনের অলোকসজ্জা দেখতে গিয়ে ঘটে এই দুর্ঘটনা। আলোকসজ্জা দেখার জন্য মাহদী দেয়ালের উপর উঠতে চাইলে অপর ছাত্র মাহমুদুল তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায় মাহদী। এরপর তাকে উদ্ধার করে মমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে দেখা যায়, ছাদে অবস্থিত গণবাথরুমের নিরাপত্তা দেয়াল প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার। বাথরুমে প্রবেশপথের পাশেই ছাদে রেলিং দেয়া। যেখান থেকে সহজেই দেখা যায় সামনের দৃশ্য। তাহলে ছয় ফুট উচ্চতার দেয়ালে কেন উঠবে, এমন প্রশ্ন নিহতের পরিবারের। বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিহত মাহদীর বাবা মানিক মৃধা বলেন, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মাদ্রাসা থেকে আমাকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, আমার ছেলে ছাদ থেকে পড়ে গেছে। কিন্তু তার পক্ষে ছাদের উচু রেলিং টপকে পড়ে যাওয়ার কথা না। এটি অন্য কোনো বিষয় থাকতে পারে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে মূল ঘটনা বের করার চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত আরও তথ্য জানা যাবে।