বিনোদন ডেস্ক
নির্মাতা জসীম আহমেদ আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, ‘মায়ার জঞ্জাল’ (ডেব্রি অব ডিজায়ার) ছবির ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হবে একটি বড় উৎসবে। সেই সুখবরটি হলো, বিশ্বের মর্যাদাসম্পন্ন মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বাংলাদেশ-ভারতের এই যৌথ প্রযোজনার ছবিটি অফিসিয়ালি নির্বাচিত হয়েছে।
উৎসবের ফিল্মস অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড বিভাগে থাকছে ছবিটি।
আজ (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাতে মস্কো উৎসবে দেখানো হবে ‘মায়ার জঞ্জাল’। গত ১ অক্টোবর শুরু হয়েছে উৎসবটির ৪২তম আসর। আগামী ৮ অক্টোবর সমাপনী দিনে রয়েছে ছবিটির আরেকটি প্রদর্শনী।
চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের (এফআইএপি) এ-গ্রেডের তালিকাভুক্ত মস্কো উৎসব। রুশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, মস্কো সরকার ও শহরটির সংস্কৃতি বিভাগ এতে সহায়তা করে।
মস্কো উৎসবে ছবিটি নির্বাচিত হলো কীভাবে? জসীম আহমেদের মুখে শোনা যাক সেই গল্প, ‘‘গোয়া ফিল্ম বাজারে প্রতিবছর দক্ষিণ এশিয়া থেকে জমা পড়া শত শত ছবির মধ্যে মাত্র ২০-২২টি ছবি রিকমেন্ডশনে রাখা হয়। এগুলো বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবের প্রোগ্রামার, পরিবেশকসহ অনেকে দেখেন। আমাদের ‘মায়ার জঞ্জাল’ ওয়ার্কিং প্রগ্রেস প্রজেক্ট হিসেবে রিকমেন্ডেশনে ছিল সেখানে। মস্কো উৎসবের আয়োজকরা গোয়ায় এটি দেখেই নির্বাচন করেন। মজার বিষয় হলো, আমাদের কিন্তু ছবিটি জমা দিতে হয়নি!’’
এর আগে চীনের মর্যাদাসম্পন্ন সাংহাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ডের অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পায় ‘মায়ার জঞ্জাল’। এই আয়োজনেই ছবিটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়।
‘মায়ার জঞ্জাল’-এর মাধ্যমে ১৫ বছর পর বড় পর্দার জন্য কাজ করলেন অপি করিম। ছবিটিতে তার চরিত্রের নাম সোমা। মেয়েটি কলকাতার। সে বিবাহিতা। স্বামী আর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। তবে স্বামী বেকার। এ কারণে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে চাকরি করে সোমা। তার স্বামী চাঁদু চরিত্রে আছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী।
আরেকটি দৃশ্যে অপি করিম২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় ‘ব্যাচেলর’ ছিল অপি করিমের প্রথম চলচ্চিত্র। এরপর আর বড় পর্দায় পাওয়া যায়নি তাকে। ‘মায়ার জঞ্জাল’-এর মাধ্যমে আবারও চলচ্চিত্রে ফিরলেন তিনি।
কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোটগল্প অবলম্বনে সাজানো হয়েছে ছবিটির চিত্রনাট্য। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের নাট্যদল প্রাচ্যনাটের সোহেল রানা (সত্য), কলকাতার অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী ঘোষ (বিউটি), পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী ব্রাত্য বসু (গনেশ বাবু)। ছবিটির শুটিং হয়েছে ঢাকা ও কলকাতায়।
‘মায়ার জঞ্জাল’ পরিচালনা করেছেন ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। ২০১৩ সালে ‘ফড়িং’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনায় আসেন তিনি। এরপর টেলিভিশনের জন্য ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’ ও ‘ভালোবাসার শহর’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি পরিচালনা করেন। পাঁচ বছর পর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনায় ফিরলেন কলকাতার এই প্রশংসিত নির্মাতা।
ছবিটি প্রযোজনা করেছেন জসীম আহমেদ। সহযোগী প্রযোজক হিসেবে আছে কলকাতার ফ্লিপবুক। আগামী বছরের শুরুর দিকে একই দিনে বাংলাদেশ ও ভারতে মুক্তি পাবে ‘মায়ার জঞ্জাল’।
এম এ হালিম