জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তরকৃত স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নামফলক সরিয়ে ফেলায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প প্রকৌশলীসহ ৫ জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ডা. মুরাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে সরিষাবাড়ীতে এই ঘটনা ঘটে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মানের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মির্জা এন্টারপ্রাইজ ও তরফদার ট্রেড কর্পোরেশন। তরফদার ট্রেড কর্পোরেশনের সত্বাধিকারী মঞ্জুরুল মোর্শেদ তরফদার সোহেল বলেন, আজ সোমবার সরিষাবাড়ী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের আয়োজন করা হয়, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। স্থানীয় এমপি ডা. মুরাদ হাসান তিন বছর আগে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মসজিদের নির্মানকাজ শেষ হলে গণপূর্তের নির্দেশনা মোতাবেক ডা. মুরাদের নামফলক সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী নামফলক স্থাপন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় সংসদ সদস্য ডা. মুরাদের নামফলক না থাকায় তার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ সময় ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুল ও সমর্থক সুমন চাকলাদারের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন কর্মী-সমর্থক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনি (৩২), স্যানেটারি সুপারভাইজার রাকিব (৩০), ইলেক্ট্রিক্যাল সুপারভাইজার বিপুল (২৮), তাদের সহকারী সৌরভ (২১) ও নৈশ্য প্রহরী তোফাজ্জল (৫৫) কে ব্যাপক মারধর করে।
পরে তাদের উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়, এবং অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় প্রকৌশলী জনি ও সুপারভাইজার রাকিবকে জামালপুর জেনারেল হাসাপাতালে রেফার্ড করা হয়। মঞ্জুরুল মোর্শেদ তরফদার সোহেল আরও বলেন, মারধরের প্রমাণ বিনষ্ট করতে তাদের লোকজন সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটর ও হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুল বলেন, সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নামে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব বলা হচ্ছে, আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত না। ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল হয়েছিল, আমি নিজে গিয়ে জনিকে রক্ষা করেছি। ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডা. মুরাদ হাসান মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এমপির নামফলক সরিয়ে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় গণপূর্ত বিভাগ সরিয়ে ফেলতে নির্দেশনা দিয়েছে। আর গণপূর্তের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা নামফলক সারানোর বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে, কিন্তু আমাদের সামনে কোন মারামারি হয়নি। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।