পেশায় স্কুল শিক্ষক। পেশার বাইরে নেশা হচ্ছে সাইক্লিং। বলছি পশ্চিমবঙ্গের স্কুল শিক্ষক পাপ্পু রায়ের কথা। শিক্ষকতার পাশাপাশি সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন প্রিয় সাইকেলকে সঙ্গী করে। সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শুধু নিজ দেশেই নয়, দেশের সীমানা পেরিয়ে বার্তা পৌঁছাতে ছুটে যান দেশের বাইরেও। দৈনন্দিন কাজের ছকে বাঁধা জীবন থেকে খানিকটা ফুসরত পেয়েই এবারের শীতকালীন অবকাশে সাইকেলে চেপে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে।
এবারের ভ্রমণের মূলমন্ত্র ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সাইকেল অভিযান। ভারত-বাংলাদেশের ভাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার বার্তা নিয়েই ছুটে চলছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার বারুইপুর থানার বেগমপুর এলাকার নিজ বাসা থেকে গত ২০ ডিসেম্বর ভোর ৪ টায় সাইকেল ভ্রমণে বের হন পাপ্পু। ওই দিনই বেনাপোল বর্ডার পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেন তিনি। তারপর বিভিন্ন জেলা ঘুরে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহে আসেন তিনি। এদিন বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও টি-শার্ট উপহারের মাধ্যমে স্বাগত জানায় ময়মনসিংহ সিটি সাইক্লিস্ট নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। এসময় কথা হয় পাপ্পু রায়ের সঙ্গে।
পাপ্পু রায় বলেন, ছোটবেলা থেকেই সাইকেল চালাতে ভালোবাসি। করোনার সময় মূলত সাইকেল নিয়ে দেশে-বিদেশে ভ্রমণের ইচ্ছাটা জেগেছিল। সাইকেল পরিবেশ দূষণকে কমায় এবং শরীরকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। সাইকেল খুব আনন্দদায়ক একটি যান। তাই আনন্দ নিয়েই আমি সাইকেল ভ্রমণ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশে এনিয়ে আমার দ্বিতীয়বার আসা। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক মজবুত করার আহবান নিয়ে এবার আমি সাইকেল নিয়ে এদেশে ছুটে এসেছি।
বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে তিনি বলেন, আমি গত ২০ ডিসেম্বর ভোর ৪ টায় বাসা থেকে বের হই। সেই দিনই আমি ১৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে যশোর আসি। তারপর কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ হয়ে আমি ময়মনসিংহ শহরে আসলাম। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়েছি। এরপর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় গিয়ে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে ফিরে যাবো। দেশে ফেরা পর্যন্ত সব মিলিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ভ্রমণের শুরু থেকেই আমি চেষ্টা করেছি এদেশের মানুষের পজিটিভ চিন্তা ভাবনাগুলোকে তুলে ধরতে। এই সফরে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশতে পারছি, সাইক্লিং গ্রুপের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দুটি দেশকে জানা এবং জানানোর জন্যই এই সাইকেল ভ্রমণ। আমি একদিকে ভারতবাসীকে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানাচ্ছি তেমনি বাংলাদেশি মানুষদেরকেও ভারত সম্পর্কে জানাতে এসেছি। দুটি দেশ যদি বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখে তাহলে অন্য কোনো দেশ আমাদের ওপর চোখ তুলে তাকাতে পারবে না।
বাংলাদেশ সফরে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা পাচ্ছেন উল্লেখ করে পাপ্পু বলেন, যেখানেই যাচ্ছি সবাই আপনজনের মতো কাছে টেনে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রচুর মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। সাইক্লিং গ্রুপ থেকেও অনেক ভালোবাসা ও উৎসাহ পেয়েছি। সেই সহযোগীতা ও উৎসাহ নিয়েই আমি সাইকেল ভ্রমণটা করে যাচ্ছি।