নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করোনা মোকাবিলায় একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অংশীদার বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অর্থনীতি, জ্বালানি ও পরিবেশ, বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি কিথ ক্র্যাচ নেতৃত্ব দেন।
মঙ্গলবার দুই পক্ষের সম্মতিতে ওই বৈঠক বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে দুইপক্ষ একমত হয় যে মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উভয়পক্ষের ভিশন এক। উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে এই ভিশন অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার জন্য।
কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য কর্মজীবী মানুষ এবং নারী ও শিশুদের নতুন ধরনের নিরাপত্তা দরকার। এক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক সহযোগিতা দরকার। বৈঠকে মেডিক্যাল শিক্ষা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, বয়ঃপ্রাপ্তদের স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়। এই কমিটি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যে জ্ঞানের ঘাটতি আছে সেটি পূরণে একে অপরের সঙ্গে কৌশল বিনিময় করবে।
কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য কৃষি-প্রক্রিয়াজাত, কৃষি বাণিজ্য ও পাট খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ওপর জোর দেয় বাংলাদেশ। কারণ এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন ও পরিবেশ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও বৈঠকে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইনস্যুরেন্স মাকের্ট উমুক্ত এবং সব সরকারি রেগুলেশন ইংরেজিতে প্রকাশের জন্য আহ্বান জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন ও বিধি এবং রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল আইন সংস্কার করার বিষয়ে উভয়পক্ষ আলোচনা করে। তুলা বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে উভয় সরকারকে আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য বৈঠকে উৎসাহিত করা হয়।
আন্তঃসীমান্ত তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের প্রযোজনীয়তার ওপর উভয়পক্ষ একমত হয়। ৪জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও ৫জি প্রযুক্তি স্থাপনের জন্য উভয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে উৎসাহ প্রদান করা হয়।
বৈঠকে আশা করা হয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমুদ্র অর্থনীতির সুবিধা পাওয়ার জন্য উভয় সরকার জ্ঞান, তথ্য ও চিন্তা আদান-প্রদান করবে। এজন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধির জন্য কাজ করবে।
বৈঠকে মাছ কোথায় আছে তা শনাক্তকরণ এবং মাছ বা সামুদ্রিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে বাংলাদেশ।
এম এ হালিম