কাতার থেকে বাড়ি ফিরছেন আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের বিতর্কিত রেফারি আন্তনিও মাতেও লাহোস। স্প্যানিশ এই রেফারি কোয়ার্টার ফাইনালের সেই ম্যাচে মোট ১৮টি কার্ড দেখিয়েছেন। ম্যাচশেষে তাকে নিয়ে অসন্তোষও জানিয়েছেন আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি, ‘আমার মনে হয় ফিফার এই রেফারিকে এই ধরনের ম্যাচে দায়িত্ব দেওয়া উচিত না। কারণ সে এটার যোগ্যই না।’
ফিফা শুনেছে সময়ের সেরা এই ফুটবলারের কথা। কাতার বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলো আর পরিচালনা করতে পারবে না রেফারি লাহোস। কারণ, সেমিফাইনাল-ফাইনালের ম্যাচে আর কোনো বিতর্ক চাইছে না ফিফা। তাই ‘জেদি’ এই রেফারিকে বিশ্বকাপ থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচে ১৬ কোচ-ফুটবলারদের হলুদ কার্ড দেখান লাহোস। ম্যাচে এত বেশি কার্ড দেখে বিরক্তই হয়েছেন দুই দলেরই খেলোয়াড়রা। এর মধ্যে আর্জেন্টিনা দলকেই দেখানো হয়েছে ১০টি হলুদ কার্ড।
এক ম্যাচে ১৮ হলুদ কার্ড দেখিয়ে বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখানোর রেকর্ডও গড়েছেন স্প্যানিশ এই রেফারি। মোট ৪৮ বার তিনি ফাউলের বাঁশি বাজান। মেসিকেও কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি লাহোস। এমনকি আলবেলিস্তেদের কোচ লিওনেল স্কালোনি আর তার সহকারীকেও হলুদ কার্ড হজম করতে হয়েছে। যার হলুদ কার্ডের গ্যাড়াকলে সেমিতে আর্জেন্টিনা পাচ্ছে না আকুনা ও মন্টিয়েলের মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের।
মোট ১৮টি কার্ডের মধ্যে আর্জেন্টিনাকেই দেখানো হয়েছে ১০টি হলুদ কার্ড। স্প্যানিশ এই রেফারিকে নিয়ে শুধু মেসিই না, বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ম্যাচশেষে তিনি বলেছেন, ‘লাহোস এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বাজে রেফারি। তিনি খুবই জেদি। তাকে কিছু বললে তিনি বাজেভাবে উত্তর দেন।’
এমন রেফারিং করার একটি কারণও খুঁজে পেয়েছেন ‘আর্জেন্টিনার বাজপাখি’ মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় স্পেন বিদায় নেওয়ায় তিনি আমাদের বিদায়টা খুব করে চেয়েছিলেন।’
৪৫ বছর বয়সী লাহোস পেশাদার রেফারিং শুরু করেন ২০০৮ সালে। চার বছর স্প্যানিশ ফুটবলের দ্বিতীয় বিভাগে ম্যাচ পরিচালনার পর ২০১২ থেকে লা লিগা এবং ২০১৩ থেকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেফারিং শুরু করেন। বিশ্বকাপে প্রথমবার ম্যাচ পরিচালনা করেন ২০১৮ আসরে। এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা–নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগে যুক্তরাষ্ট্র–ইরান ও কাতার–সেনেগাল ম্যাচেও বাঁশি ছিল তার হাতে।
সব মিলিয়ে পেশাদার ক্যারিয়ারে ৪৯৮টি ম্যাচে রেফারিংয়ের অভিজ্ঞতা তার। এই ম্যাচগুলোতে হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন ২ হাজার ৩২৬টি, লাল কার্ড ৫৫টি; আর পেনাল্টি দিয়েছেন ১১৯টি। ২০২০ ইউরোর পর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। তবে গত বছরের শেষ দিকে আবার মাঠে ফিরে আসেন।