নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে অস্ত্র হাতে আর্জেন্টিনার জার্সি পরা ব্যক্তি আনসার সদস্য। তার নাম মাহিদুর রহমান। তিনি পল্টন মডেল থানার অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
জার্সি পরে ‘অ্যাকশনে’ নামার কারণ জানতে চাইলে মাহিদুল ইসলাম বলেন, কালকে বিএনপির প্রোগ্রামে মারামারি লাগে গেটের সামনে। হঠাৎ করে এলার্ম বাজলো। ওসি স্যারের নির্দেশ দেয়াই আছে, এলার্ম বাজলে যে যেই অবস্থায় আছে সে সেই অবস্থায় নিচে নামবে। আমি তখন শুয়ে ছিলাম। খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে ছিলাম। জুতাটা পড়েই চলে আসছি। বুলেট প্রুফ বা অন্য কিছু যে পড়বো, এটা আমি টাইম পাই নাই।।
তার ভাষ্য, আইসাই দেখছি ইট ছুড়ছে। গেছি অস্ত্র নিয়া। এটুকুই আর কিছু না। ওই পোশাকে আমিই ছিলাম।
তবে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ বলেন, ‘কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমিও তো সিভিল পোশাকের দায়িত্ব পালন করি। জানমালের প্রশ্নে পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যে কোনো সময় যে কোনো ধরনের পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।’
১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি সফল করতে বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় একজন প্রাণ হারান। আহত হন অন্তত ২৫ জন।
রাজধানীতে এ সংঘর্ষ চলার সময় আকাশি-নীল জার্সি পরা এক পুলিশ সদস্যের তৎপরতা সবার নজরে আসে। তার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ধরনের পোশাক পরে কোনো অভিযানে যাওয়া যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নয়াপল্টনে পুলিশের একটি ভ্যানের আড়াল থেকে শটগান থেকে গুলি ছুড়ছেন একজন। তার মাথায় নীল হেলমেট, গায়ে আর্জেন্টিনার জার্সি। এ সময় তার পাশ থেকে পুলিশের পোশাক পরা দুজনকে একসঙ্গে গুলি করতে দেখা গেছে।
এর মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে ওই ব্যক্তি ছাত্রলীগের এক নেতা। পরে এর প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন রহমান।