দিনের বেলায় কেউ চালাতেন অটোরিকশা, কেউ আবার সবজি বিক্রেতা। তবে রাত হলেই পেশা বদলে তারা হয়ে যেতেন ডাকাত। সংঘবদ্ধ হয়ে দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করার পর ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরি করে স্থান ত্যাগ করত ডাকাতদল। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে করে আসছে ডাকাতি। ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে মঙ্গলবার দুই ডাকাত সর্দারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এমন সব তথ্য।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে নৈশ প্রহরীদের বেঁধে নান্দাইল বাজারে আব্দুল মতিনের মুক্তা জুয়েলার্স ও রফিকুল ইসলামের বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে ডাকাতি করে স্বর্নালংকার ও নগদ টাকা লুট করে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। মুক্তা জুয়েলার্স থেকে ৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৪০ ভরি রূপা এবং বিসমিল্লাহ জুয়েলার্স থেকে ১৩ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ ভরি রূপার অলংকার, নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা লুট করে। ডাকাতি শেষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।
এ ঘটনায় গত ১০ অক্টোবর ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকার দারুস সালাম থানার দ্বীপনগর থেকে ডাকাত সর্দার হাসমত বেপারী (৪৩) ও জসিম ওরফে মুন্না (৩৯) এবং আদাবর থানার সুনিবিড় আবাসিক এলাকা থেকে স্বর্ণের দোকানদার ইকবাল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ইকবালের দোকান থেকে লুন্ঠিত ১১ আনা স্বর্ণালংকার ও ৭০ ভরি রূপা অলংকার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাররা তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদেরও এই পেশায় যুক্ত করেন। রাতে ডাকা করে আর দিনের বেলায় অন্য পেশায় থাকে তারা। অনেকে আবার জেলে গিয়েও তাদের সদস্য বৃদ্ধি করত। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ১০ টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
এর আগে, গত ১০ অক্টোবর আন্ত:জেলা ডাকাত দলের আরও চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। ঘটনায় জড়িত চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।