ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে বিশ্বের সর্বাধুনিক এফেরেটিক মেশিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে এফেরেসিস প্রক্রিয়ায় সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট ও থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ হবে উন্নত বিশ্বের সমমানের।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে মমেক হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ডে কেয়ার সেন্টারে অবর্ধক রক্তশূন্যতার রোগীকে ‘এ পজিটিভ’ প্লাটিলেট প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়। মেশিনটির মাধ্যমে প্রথম এই প্লাটিলেট দেন রক্তদাতাদের সংগঠন ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটির স্থায়ী কমিটির সদস্য উবায়দুল হক।
প্লাটিলেট প্রদান নিয়ে তিনি বলেন, প্লাটিলেট দেওয়ার কোনো অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। তাই নতুন একটি অভিজ্ঞতা হল। সেইসাথে এই মেশিনের মাধ্যমে মমেক হাসপাতালে প্রথম প্লাটিলেটদাতা হতে পেরেছি। আমি খুবই আনন্দিত।
এসময় হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ ডা. জিনাত ঈশিতা আনসারী, ব্লাড ব্যাংকের ইনচার্জ ফায়জুর রহমান, এফেরেটিক মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডায়ামেড’র এক্সিকিউটিভ অফিসার ফাহাদিন বিন হাকিম ও এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আমির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ওয়ায়েজউদ্দিন ফরাজী জানান, প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা হচ্ছে রক্তের এক ধরনের ক্ষুদ্র কণিকা। যা রক্ত জমাট বাঁধতে ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে। স্বাভাবিক মানুষের রক্তে অণুচক্রিকার হার প্রতি ১০০ মিলিলিটারে দেড় লাখ থেকে চার লাখ। সাধারণত, ৪ জন ডোনার থেকে ১ ব্যাগ প্লাটিলেট সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন উন্নত প্রযুক্তির কল্যাণে ১ জন ডোনার থেকেই ১ ব্যাগ প্লাটিলেট বের করা যায়।
তিনি আরও জানান, এফেরেটিক মেশিন দ্বারা একজন ডোনারের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে মেশিনে প্রসেসিং করে প্লাটিলেট বের করে রক্তের বাকী অংশটুকু আবার ডোনারের শরীরে পুশ ব্যাক করা হয়। একবার প্লাটিলেট দিলে ১০-১৫ দিন পর আবার সে প্লাটিলেট দিতে পারে। কারণ অণুচক্রিকা ছাড়া রক্ত থেকে অন্য কিছু নেয়া হয়না। আর অণুচক্রিকার জীবনকাল থাকে সর্বোচ্চ ৩ দিন। যা ২/৩ দিনেই শরীরে আবার ফিরে আসে। প্লাটিলেট ডোনার একাই ৪ জন ডোনারের কাজ করছে।