প্রায় এক যুগ পর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন মো. আরমিন নামে ছাত্রলীগের এক নেতা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দুধ দিয়ে গোসল করার একটি ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন আরমিন। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে গত বুধবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খানের স্বাক্ষরিত ১৯ সদস্যবিশিষ্ট পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে নাজমুল আলমকে সভাপতি ও মো. তোফায়েল আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দুধ দিয়ে গোসল করা আরমিনকে কমিটিতে ১ নম্বর সহসভাপতি করা হয়েছিল।
পাকুন্দিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার কমিটি ঘোষণার পর থেকে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। পদবঞ্চিত একটি অংশ কমিটি বাতিল চেয়ে বুধবার বিকেলে পাকুন্দিয়া পৌর সদর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ছাত্রলীগ নেতা আরমিন আহমেদ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘১২ বছর ছাত্রলীগ থেকে আমার অর্জন ৭টি মামলার আসামি, এক বছর ধরে পুলিশের হয়রানি। পঙ্গু, শূন্য পকেটে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে বিদায় নিলাম।’
আরমিন বলেন, ‘ছাত্রদল থেকে আগত, বিএনপি পরিবার থেকে আগত কারও কাছে আত্মসমর্পণের চেয়ে বিদায় নেওয়া ভালো সিদ্ধান্ত। রাজনীতিটা বুক দিয়ে নয়, আবেগ দিয়ে করেছি। আবেগে ভেজালের স্থান নেই। ঘোষিত কমিটিতে আমিই সবার সিনিয়র। সভাপতি করা হলে আমাকে করা হবে। আমি কোন পদের প্রার্থী তা না জিজ্ঞেস করেই ফেসবুকে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আমি দুঃখে দুধ দিয়ে গোসল করে ছাত্ররাজনীতির ইতি টানলাম।’
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন পর পাকুন্দিয়ায় একটি চমৎকার কমিটি দেওয়া হয়েছে। সবাইকে তো আর যার যার পছন্দমতো পদ এবং সন্তুষ্ট করা যায় না। সে জন্য অনেকে নানা মাধ্যমে নানা কথা বলে কমিটির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার চেষ্টা করছে। তবে সময়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন নতুন কমিটির সভাপতি নাজমুল আলম। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিতরাসহ একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আবার অনেকেই সস্তা প্রচারণা চালিয়ে ভাইরাল হতে ফেসবুকের আশ্রয় নিচ্ছে।