জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সমকামীর বিয়ের ঘটনায় দুই কিশোরীসহ তাদের দুই সহযোগী কিশোরীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এ সমকামী বিয়ে নিয়ে এলাকা তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। দুই মেয়ের মধ্যে এ বিয়ের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ি গ্রামে।
বুধবার স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ী গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে মিম আক্তার আদুরি (১৫) ও টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলা পাচনখালী গ্রামের রয়েজ আলীর মেয়ে আরিয়ান ইসলাম মিম (১৫)।
২ বছর আগে ফেইসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। ধিরে ধিরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্ককে পরিণতি দিতে গত ৩দিন আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকার মহাখালীতে গিয়ে তারা বিয়ে করেন।
খবর পেয়ে তাদের পরিবারের লোকজন ঢাকার মহাখালী থেকে ডোয়াইলের হাটবাড়ীতে নিয়ে আসেন। সাথে তাদের দুই সহযোগী আয়াত আক্তার (১৭) ও রফিক ইসলাম (১৮) নামে দুই মেয়েকেও নিয়ে আসা হয়।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার ইউনিয়নের হাটবাড়ি গ্রামের দুদু মিয়ার বাড়িতে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের নেতৃত্বে হাজারো নর-নারীর উপস্থিতিতে দুই সমকামিতা কিশোরীর জবানবন্দি শেষে সরিষাবাড়ী থানার এসআই আব্দুল খালেক এর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
কিশোরীরা তাদের জবানবন্দীতে জানিয়েছেন , ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার পাচনখালী গ্রামের রয়েছ উদ্দিনের মেয়ে সমকামিতা আরিয়ান আক্তার (১৮) ডোয়াইল ইউনিয়নের হাট বাড়ি গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে মিম আক্তার (১৭) কে মৌলভীর দ্বারা বিবাহ করে। তারা দুজনেই সরিষাবাড়ী উপজেলার কুঠির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তারা তাদের দীর্ঘ ৩ বছরের সম্পর্কের কথা জানান এবং পরবর্তী সময়ে একসাথে থাকবে বলেও জানান। অপর দুই মেয়ে সহযোগী পুরান ঢাকার ১১নম্বর রোডের রফিক মিয়ার মেয়ে আয়াত (১৯) বান্ধবী রাফিন ইসলাম (১৯) সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এ কর্মরত বলে জানায়।
মিম আক্তার আদুরির বাবা দুদু মিয়া বলেন, অপর মেয়েটি তার মেয়ের বান্ধবী। মাঝে মধ্য সে এখানে বেড়াতে আসত। ৩ দিন আগে অপর মেয়েটি তার মেয়েকে ফুঁসলিয়ে মহাখালীতে নিয়ে যায়।
ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন জানান, সমকামী বিয়ের খবর পেয়ে আমি এলাকায় গিয়ে তাদের নিয়ে বসে কথা বলি।
তিনি জানান, কিভাবে মেয়ের সাথে মেয়ের বিবাহ হয়। এটা সত্যিই একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এর সমাধান খুঁজে না পাওয়ায় তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরিষাবাড়ী থানার ওসি মহব্বত কবীর জানান, এ বিষয়ে চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তাদেরকে পরিবারের লোকজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।