ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তুলনায় ১৭ দশমিক ৯৩৬ বর্গকিলোমিটার ছোট। আয়তনের পাশাপাশি জনসংখ্যা, বসতবাড়ি ও উন্নয়ন প্রকল্পে পিছিয়ে থাকলেও মসিক এগিয়ে শব্দদূষণে। ডিএসসিসির চারটি এলাকায় উচ্চমাত্রায় শব্দদূষণ থাকলেও মসিকে এর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।
ময়মনসিংহ শহরের ৯টি স্থানে অধিকাংশ সময় ৯০ ডেসিবেলের ওপর শব্দ থাকছে। বিষয়টি উদ্বেগের উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের মাশুল গুনছে শহরটি। উচ্চমাত্রায় শব্দদূষণের ফলে শহরটিতে দীর্ঘস্থায়ী বধিরতাসহ জটিল ব্যাধি বাড়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ময়মনসিংহ শহরে শব্দদূষণের এমন চিত্র উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
মসিকের আয়তন ৯১ দশমিক ৩১৫ বর্গকিলোমিটার, অন্যদিকে ডিএসসিসির আয়তন ১০৯ দশমিক ২৫১ কিলোমিটার।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) ২০২১ সালের এক সমীক্ষা বলছে, ডিএসসিসির
শাহবাগ, মতিঝিল, আহসান মঞ্জিল ও ধানমন্ডি ৩২ এই চার এলাকায় দিনের বেশির ভাগ সময় শব্দের মাত্রা ৮০-৯০ ডেসিবেল ছাড়াচ্ছে। এর মধ্যে আহসান মঞ্জিল ও শাহবাগ নীরব এলাকা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী- বাণিজ্যিক, আবাসিক ও সংবেদনশীল এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা হতে পারে যথাক্রমে ৭০, ৫০ ও ৪৫ ডেসিবেল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় ৫৫ ডেসিবেল এবং সংবেদনশীল এলাকায় ৪৫ ডেসিবেল হবে শব্দের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা।
ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক গবেষণা বলছে, ময়মনসিংহ শহরের ৯০ শতাংশ এলাকাই অতিমাত্রার শব্দদূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাভেদে শহরটির কোথাও কোথাও শব্দের তীব্রতা ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবেলও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
গবেষণাটির ফলাফল থেকে ‘দ্য স্ট্যাটাস অব নয়েজ পলিউশন অব ময়মনসিংহ সিটি, বাংলাদেশ: এ জিআইএস-বেইসড নয়েজ ম্যাপিং’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনটি সম্প্রতি দ্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সায়েন্টেফিক রিসার্চ (আইওএসআর)-এর জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, টক্সিকোলজি অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইওএসআরজেইএসটিএফটি) প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় ময়মনসিংহ শহরের বাণিজ্যিক, আবাসিক ও হাসপাতালের মতো সংবেদনশীল অঞ্চল এই তিন শ্রেণি ভাগ করে শহরের ২৬টি এলাকার সকাল, বিকেল ও সন্ধ্যার শব্দের পরিমাপ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, শহরের অধিকাংশ এলাকায় শব্দদূষণ হয়। বেশ কয়েকটি জায়গায় শব্দদূষণের মাত্রা ৯০ ডেসিবেলও ছাড়িয়েছে।
শহরের ২৬টি এলাকায় তিনটি যন্ত্র দিয়ে শব্দ পরিমাপ করে গবেষণা দলটি।
শব্দদূষণের প্রভাবের ওপর নির্ভর করে এলাকাগুলোকে ভেরি লাউড, লাউড ও মডারেট- এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, ভেরি লাউড শ্রেণির এলাকা রয়েছে নয়টি, লাউড শ্রেণির ১৪টি ও মডারেট শ্রেণির তিনটি। ভেরি লাউড শ্রেণির এলাকায় শব্দদূষণের মাত্রা ৭৫-৯০ ডেসিবেল, লাউড শ্রেণির এলাকার শব্দের মাত্রা ৬৫-৭৫ আর মডারেট এলাকায় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের নিচে।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভেরি লাউড বা অতিদূষণের ৯টি এলাকার মধ্যে বাণিজ্যিক এলাকা ৭টি এবং আবাসিক ও সংবেদনশীল জায়গা রয়েছে যথাক্রমে একটি করে।
কোথায় কেমন শব্দদূষণ
ময়মনসিংহ শহরের টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাজার, নওমহল এলাকায় শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শব্দের তীব্রতা সকালে ৬৮ দশমিক ৫, বিকেলে ৯৩ দশমিক ৩ এবং সন্ধ্যায় ৮৩ দশমিক ৭ ডেসিবল।
নতুন বাজার এলাকায় সকালে ৮২ দশমিক ৬, বিকেলে ৯০ দশমিক ৬ ও সন্ধ্যায় ৮৫ দশমিক ২ ডেসিবল। নওমহলে সকালে ৭৪ দশমিক ৯, বিকেলে ৯০ দশমিক ৫ ও সন্ধ্যায় ৭৮ দশমিক ১ ডেসিবল। এই এলাকাগুলোকে ভেরি লাউড বা উচ্চমাত্রার শব্দদূষণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এছাড়া সংবেদনশীল শ্রেণিভুক্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ এলাকার শব্দের তীব্রতা সকালে থাকছে ৭৭ দশমিক ২, বিকেলে ৮২ দশমিক ৫ এবং সন্ধ্যায় ৮৭ দশমিক ৩ ডেসিবেল।
এলাকাটিতে মেডিকেল কলেজ থাকায় ডাক্তার, রোগী ও শিক্ষার্থীরা শব্দদূষণের মাধ্যমে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
শব্দের মডারেট প্রভাবের মধ্যে শহরের মাত্র তিনটি এলাকা রয়েছে। এসব এলাকায় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের নিচে। শহরের জয়নুল আবেদীন পার্ক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকাকে মডারেট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় বিকেলের দিকে অপেক্ষাকৃত শব্দের পরিমাণ বেশি থাকে।
জিরো লাউড এলাকার মধ্যে জিরো পয়েন্ট এলাকায় সকালে ৭৪ দশমিক ৯, বিকেলে ৮৮ দশমিক ৭ ও সন্ধ্যায় ৮৮ দশমিক ৬ ডেসিবল। টাউন হল এলাকায় সকালে ৭৬, বিকেলে ৮২ দশমিক ১ এবং সন্ধ্যায় ৮৬ দশমিক ৮ ডেসিবেল।
চরপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকালে ৮৩, বিকেলে ৮৩ দশমিক ৩ এবং সন্ধ্যায় ৮৯ দশমিক ৫ ডেসিবেল, মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকালে ৭২ দশমিক ২, বিকেলে ৮৫ দশমিক ৫ এবং সন্ধ্যায় ৮৫ দশমিক ৩ ডেসিবেল, কাঁচিঝুলি এলাকায় সকালে ৮৩ দশমিক ৭, বিকেলে ৮৭ দশমিক ৪ এবং সন্ধ্যায় ৮২ ডেসিবেল।
অন্যদিকে লাউড শ্রেণির শব্দদূষণের ১৪টি এলাকার মধ্যে বাণিজ্যিক ৯টি। যার মধ্যে তিনটি সংবেদনশীল ও দুটি আবাসিক এলাকা রয়েছে। এসব এলাকার শব্দের মাত্রা ৬৫-৭৫ ডেসিবেল থাকায়, এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
লাউড ক্যাটাগরিতে শহরের ময়মনসিংহ লাইব্রেরি এলাকায় সকালে ৫৪ দশমিক ৬, বিকেলে ৬৪ এবং সন্ধ্যায় ৭৪ দশমিক ৮ ডেসিবল, আনন্দ মোহন কলেজ এলাকায় সকালে ৬৩ দশমিক ৭, বিকেলে ৭১ এবং সন্ধ্যায় ৭১ দশমিক ২ ডেসিবেল, ময়মনসিংহ জেলা স্কুল এলাকায় সকালে ৮০ দশমিক ৯, বিকেলে ৭৩ দশমিক ১ এবং সন্ধ্যায় ৭৩ দশমিক ৪ ডেসিবেল থাকছে।
ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকালে ৭৭, বিকেলে ৭০ দশমিক ১ এবং সন্ধ্যায় ৮০ দশমিক ৭ ডেসিবেল, ময়মনসিংহ সিটি বাইপাস এলাকায় সকালে ৭৩ দশমিক ২, বিকেলে ৭২ দশমিক ৬ এবং সন্ধ্যায় ৭৮ দশমিক ৫ ডেসিবেল শব্দ থাকছে।
কেওয়াটখালী এলাকায় সকালে ৭৩ দশমিক ৪, বিকেলে ৭২ দশমিক ৩ এবং সন্ধ্যায় ৭৫ দশমিক ৮ ডেসিবেল। চায়না ব্রিজ মোড় এলাকায় সকালে ৭৭ দশমিক ৭, বিকেলে ৭৭ দশমিক ৪ এবং সন্ধ্যায় ৭৯ দশমিক ৮ ডেসিবেল। আলিয়া মাদরাসা এলাকায় সকালে ৬৬ দশমিক ৪, বিকেলে ৬৮ দশমিক ১ এবং সন্ধ্যায় ৬৭ দশমিক ৯ ডেসিবেল।
গাঙ্গিনাপাড় এলাকায় সকালে ৭৯ দশমিক ২, বিকেলে ৭৫ দশমিক ৭ এবং সন্ধ্যায় ৮১ দশমিক ৫ ডেসিবেল। ছোট বাজার এলাকায় সকালে ৭৭, বিকেলে ৭৭ দশমিক ৪ এবং সন্ধ্যায় ৭৯ দশমিক ৩ ডেসিবেল। জিকে ঘোষ রাস্তা এলাকায় সকালে ৬৮ দশমিক ৬, বিকেলে ৭২ দশমিক ২ এবং সন্ধ্যায় ৭৩ দশমিক ৫ ডেসিবেল।
রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় সকালে ৬৮ দশমিক ৯, বিকেলে ৬১ দশমিক ৩ এবং সন্ধ্যায় ৬৯ দশমিক ৭ ডেসিবেল। কে আর মার্কেট এলাকায় সকালে ৬১ দশমিক ৮, বিকেলে ৬৬ দশমিক ৬ এবং সন্ধ্যায় ৬১ দশমিক ৩ ডেসিবেল।
জব্বারের মোড় এলাকায় সকালে ৭৬ দশমিক ১, বিকেলে ৭১ দশমিক ২ এবং সন্ধ্যায় ৬৮ দশমিক ১ ডেসিবেল। এসব এলাকায় একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
প্রতিবেদনটি বলছে- অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে জনসংখ্যার আধিক্য, যত্রতত্র অটোরিকশা, বাস ও ট্রাকের অনিয়ন্ত্রিত হাইড্রোলিক হর্নের কারণে শহরটির শব্দদূষণ চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে কোলাহল কম থাকায় নগরীর বোটানিক্যাল গার্ডেন ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দের মাত্রা থাকছে ৪৪ ডেসিবেল।
এ প্রসঙ্গে গবেষক দলের সদস্য ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাসেদ হাসান সজিব বলেন, শহরের আবাসিক ও সংবেদনশীল এলাকাগুলোতেও শব্দদূষণের মাত্রা অনেক বেশি। হাসপাতালের মতো জায়গায় অতিমাত্রায় শব্দ দূষিত হচ্ছে। মসিকের উচিত শব্দদূষণে এলাকাগুলোয় ট্রাফিক ও হর্ন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ময়মনসিংহ জেলার নির্বাহী সদস্য ইবনুল সায়েদ রানা বলেন, শহরটিতে নগরায়ণ পরিকল্পনার ‘প’ টা হয় নাই। জেলা শহর কিংবা বিভাগীয় শহর হিসেবে পরিকল্পনার ছোঁয়াটাও লাগে নাই। পৌরসভায় টাকা খরচ করলেই ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যায়। অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে পুরো শহর সয়লাব করে রেখেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পৌরসভায় দুজন সমন্বয় করে কিন্তু তারা অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে শহরকে গাদাগাদি করে ফেলেছে।
মাত্র পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে ময়মনসিংহকে সিটি করপোরেশন হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। সিটি করপোরেশনে ও বিভাগীয় শহর হওয়ায় এই শহরটিতে অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয়েছে অন্যদিকে শহরের আয়তন বাড়েনি। ফলে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে শহরটিতে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রানা বলেন, বিগত কয়েক দশকে এই শহরের আয়তন এক ইঞ্চিও বাড়েনি বরং লোকসংখ্যা বেড়েছে। বহুতল ভবন করার ঝোঁক তৈরি হয়েছে। প্রতি মূহূর্তে এই শহরের অবস্থা বিপজ্জনকের দিকে যাচ্ছে। বিভিন্ন জটিলতায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলো ইচ্ছা করলেই সড়কে কাজ করতে পারে না।
অপরিপকল্পিত নগরায়ণ ও অটোরিকশা প্রসঙ্গে মসিক মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, জনসংখ্যা বাড়ছে। যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। এটা শুধু ময়মনসিংহ না, সারাদেশ ও বিশ্বে এটা বাড়ছে। নাগরিক জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই, কেননা জনসংখ্যা সামাল দেওয়ার জন্য যানবাহন লাগবেই।
গবেষণার ফলাফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এটা চিহ্নিত করেছে। কিছুদিন আগে এ বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আমরা সচেতনতা তৈরির কাজ করছি। যেসব এলাকায় প্রবল শব্দদূষণ হয় সেখানে শব্দের মাত্রা সংবলিত বোর্ড করা, নীরব এলাকা ঘোষণার কাজ হাতে নিয়েছি। এসব কাজে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে কাউন্সিলরদের বলেছি। হর্নে নিরুৎসাহিত করতে পারলে আমার মনে হয় পজিটিভ ফলাফল আসবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শব্দের এমন দূষণের কারণে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ একাধিক রোগে আক্রান্তের হার বাড়বে। এই দূষণের কারণে ট্রাফিক পুলিশ, শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমরা গবেষণা করে দেখেছি ঢাকায় যে ধরনের শব্দের তীব্রতা রয়েছে বাংলাদেশের প্রায় সব জেলা শহরে মোটামুটি একই ধরনের তীব্রতা আছে। পার্থক্য হলো ঢাকায় শব্দের তীব্রতা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮-১৯ ঘণ্টাই থাকে আর অন্য জায়গায় সেটা ৮-১০ ঘণ্টা থাকে।
তিনি বলেন, জেলা শহরগুলোতে ইজিবাইক ও অটোরিকশার সরব উপস্থিতি রয়েছে। এগুলো প্রতিনিয়ত হর্ন দিতে থাকে। জেলা শহরগুলোতে প্রচুর মাইকিং হয়, বাস ও ট্রাকে অনবরত হাইড্রোলিক হর্ন বাজে। এসব কারণে ছোট শহরগুলোতে এখন শব্দদূষণ হচ্ছে।
শব্দদূষণ বেশি হলে আমরা বধিরতার দিকে ধাবিত হবো জানিয়ে তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়ের শব্দদূষণে ক্ষতি হতে পারে। এমনকি নবজাতকও বধির হয়ে জন্ম নিতে পারে। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের রোগী ও বৃদ্ধরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।