ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতি কেজি মিষ্টির খালি প্যাকেটের ওজন ২০৫ গ্রাম। এতে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ক্রেতা সাধারণ। এছাড়া কারখানাগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
ত্রিশাল পৌর শহরের বেশ কিছু মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায়, মিষ্টির দোকানে মূল্য তালিকা থাকার কথা থাকলেও তা না মেনে অতিরিক্ত দামে মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মিষ্টির কার্টনের ওপরের কভার হালকা থাকলেও নিচেরটা ভারি। সাধারণ মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতি কেজি মিষ্টির মূল্য ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। তবে অভিজাত মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতি কেজি মিষ্টির মূল্য ২৩০ থেকে ৬০০ টাকা।
ক্রেতারা মিষ্টি কিনতে গেলে কার্টনসহ মিষ্টি ওজন করা হয়। এতে ক্রেতারা ১ কেজি মিষ্টি কিনলেও প্রকৃতপক্ষে পান ৭৭৫ থেকে ৮৫০ গ্রাম মিষ্টি। কেউ নিজের দোকানের নামে আবার কেউ তৈরি কার্টন বাজার থেকে স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে বিক্রি করা হচ্ছে মিষ্টির দামে।
ডিজিটাল পাল্লায় মিষ্টির ওজনের সঙ্গে কৌশলে মিষ্টির কার্টনও ওজন দেওয়া হয়। প্রতিটি মিষ্টির দোকানে ওজনে কারচুপি প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
মিষ্টির কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কারিগররা মিষ্টি, দই তৈরি করছেন। পৌর শহর ও ইউনিয়নের বাজারগুলোতে প্রায় শতাধিক মিষ্টির দোকান রয়েছে। এই ওজন নিয়ে প্রায়ই ক্রেতাদের সঙ্গে দোকান মালিকদের বাগবিতণ্ডা হচ্ছে।
দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় দোকানের মালিকরা ইচ্ছামাফিক মিষ্টির দাম আদায় করছেন। মিষ্টি ওজনের সময় প্যাকেটসহ পরিমাপ করছেন। আবার দইয়ের ক্ষেত্রে পাতিলের ওজনসহ বেশি দামে দই বিক্রি করছেন। আমরা দোকানদারদের কিছু বললে দোকানি বলেন- দুধ, চিনির দাম বেশি। বেশি দামে নিলে নেন না নিলে না নেন।
মিষ্টি কিনে ভুক্তভোগী একজন বলেন, ত্রিশালে ঢাকা থেকে একটি মিষ্টির দোকান আসছে। মনে করেছিলাম অনেক ভালো মিষ্টি। বাসার জন্য ৩৫০ টাকা কেজির মিষ্টি নিয়েছিলাম। বাসায় আনার পর বাচ্চারা কেউ মিষ্টি খাচ্ছে না। পরে নিজে খেয়ে দেখি মিষ্টি কয়েক দিনের বাসি। দুর্গন্ধে কোনোভাবেই খাওয়া যাচ্ছে না।
ত্রিশাল বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, মিষ্টির দোকানের কারচুপি সম্পর্কে আমার কাছে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। আমি নিজেও এর শিকার। আমি নামকরা মিষ্টির দোকান থেকে কেক নিয়েছিলাম। কেক কয়েক দিনের বাসি। খাওয়ার অনুপযোগী ছিল। অন্যান্য মিষ্টির দোকান থেকে তাদের মিষ্টির দামও অনেক বেশি। মিষ্টির দোকানগুলোতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা দরকার।
উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সরকারি নির্দেশনার চেয়ে বেশি প্যাকেটের ওজনে মিষ্টি বিক্রি করলে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানাসহ এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।