শেরপুরের কসবা বারাকপাড়া এলাকার রুবিনা (৪৪) ও রুমা (৪২)। সম্পর্কে তারা সহোদর বোন। এলাকায় তারা পরিচিত বড় আপা-ছোট আপা নামে। দুই বোন মিলে তারা গড়ে তুলেছে হেরোইনের সিন্ডিকেট। যার প্রধান রুবিনা-রুমা। সিন্ডিকেটটি রাজশাহী থেকে হেরোইনের চালান এনে শেরপুরসহ ময়মনসিংহ বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে সরবরাহ করত।
তারই ধারবাহিকতায় চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে এমনই একটি হেরোইনের বড় চালান আনার পথে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে ধরা পড়েছে দুই যুবক মেহেদি (৩১) এবং নাছিরুল (৩২)। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয় সহোদর বোন রুবিনা এবং রুমাকে।
শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খোরশিদ আলম।
এর আগে, শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহের একটি হোটেল থেকে মাদক ব্যবসায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেহেদী হাসান ও নাছিরুলকে এবং শেরপুর থেকে রুবিনা ও রুমাকে আটক করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এময় তাদের কাছ থেকে এক কেজি ৫০ গ্রাম হোরোইন (অবৈধ বিক্রয় মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা), মাদক বিক্রি করা ২৪ হাজার টাকা, পাচার কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার এবং ৫টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খোরশিদ আলম বলেন, আমরা গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, শুক্রবার রাতে শেরপুরের দুই শীর্ষ হেরোইন ব্যবসায়ী রুমা ও রুবিনার কাছে রাজশাহী বিভাগের চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে মাদকের একটি চালান আসছে। সেই তথ্য পাওয়ার পর জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা ওঁৎ পেতে থাকে। তবে মাদক ব্যবসায়ীরা গতিপথ পরিবর্তন করে জামালপুর হয়ে ময়মনসিংহ চলে আসে এবং নগরীর গঙ্গাদাস রোডস্থ হোটেল মোস্তাফিজ ইন্টারন্যাশানাল এর তৃতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে অবস্থান করে।
পরবর্তীতে দিবাগত রাত ১ টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে মেহেদী হাসান ও তার সহযোগী নাছিরুল ইসলামকে আটক করে জিঞ্জাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের দেখানো ও শনাক্ত মতে তাদের পরিহিত আন্ডার ওয়ারের নিচ থেকে এবং প্রাইভেটকারের ভিতর সুকৌশলে লুকানো অবস্থায় এক কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আসামিদের তথ্যমতে শেরপুর জেলার নকলা থানার চন্দকোনা থেকে মোছা. রুবিনাকে ২৫ গ্রাম হেরোইনসহ এবং শেরপুর শহর থেকে তার বোন রুমাকে ২৫ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরে যেন মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য আমার নিবিড়ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তালিকা তৈরি করে তাদেরকে ধরার ব্যবস্থা করছি।