ময়মনসিংহের নান্দাইলের মাজার বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশ থেকে গত ১১ আগস্ট শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও অচেতন অবস্থায় কাদামাখা অজ্ঞাত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় এলাকাবাসী। পরেরদিন জানা যায়, ওই ব্যক্তি বিকাশের বিতরণ কর্মী। দুর্বৃত্তরা তাকে মুখবেঁধে একটি মাইক্রোতে উঠিয়ে পিটিয়ে ও ক্ষুরাঘাতের পর ইনজেকশন পুশ করে, ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। এ ঘটনার পর তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত বুধবার নান্দাইল থানায় চারজনেক অভিযুক্ত করে একটি মামলা করা হয়। পরদিন মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য স্থানান্তর করা হয় ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের কাছে। তাদের কাছেই ওই বিকাশকর্মী স্বীকার করেন যে, অনলাইন জুয়ায় হেরে ঋণ করে আনা টাকা পরিশোধ করতেই ১২ লাখ টাকা ডাকাতির নাটক তিনি নিজেই সাজান।
ডাকাতির ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে গিয়ে তিনি নিজের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্লেড দিয়ে ক্ষত ছাড়াও ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে চিহ্ন করেন। অচেতনতার ব্যাপারটিও ছিল তার অভিনয়। তিনি এসব বক্তব্য আজ শুক্রবার বিকেলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ময়মনসিংহের ৩নং জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের আদালতে। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্র ও থানা পুলিশ জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে নান্দাইলের মাজার বাসস্ট্যান্ডের একটি ইটভাটার পাশে পড়ে ছিল অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। পরে তাকে উদ্ধার করে নান্দাইল হাসপাতালে পাঠালে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরদিন জ্ঞান ফিরে এলে তিনি জানান, তিনি হচ্ছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ধূরুয়া গ্রামের মোতাহারের ছেলে শামীম রেজা। তিনি নান্দাইল উপজেলায় বিকাশের বিতরণ কর্মকর্তা (ডিএসও) হিসেবে কাজ করেন।
নান্দাইল থানার মামলা থেকে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে ওই বিকাশকর্মী শামীম রেজা জানান, ২০ লাখ টাকা নিয়ে তিনি গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিকাশ এজেন্টদের নম্বরে টাকা লোড করে দেন।
পরে ১২ লাখ টাকা নিয়ে বিকেলে উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের কালীর বাজার থেকে একটি ইজিবাইকে উঠে নান্দাইলের বাকচান্দা বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে ইজিবাইকের কয়েকজন যাত্রী তাকে জোর করে সামনের একটি মাইক্রোবাসে নিয়ে তুলে। মাইক্রোবাসের ভেতরে তাকে বেদম মারধর করার পর তার শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করে। এতে তিনি চেতনা হারান। পরে তাকে টহল পুলিশের একটি দল ইটভাটার পাশ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের ওসি মো.শফিকুল ইসলাম জানান, ‘মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজনে শামীম রেজা নিজেই এ নাটক সাজিয়েছেন। এ ব্যাপারে আরো তদন্ত হবে। ‘