জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে গেলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। এ সময় হেলমেট ও লাইসেন্স না থাকায় তাঁর বহরে থাকা চারটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে বকশীগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নুর মোহাম্মদ বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন প্রত্যাশী। ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত তিনি।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি বকশীগঞ্জ উপজেলায় আসেন নুর মোহাম্মদ। এরপর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শোডাউন করার ঘোষণা দেন।
আজ সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যেই সকালে নুর মোহাম্মদ তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মোটরসাইকেলে শোডাউনে বের হন। দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নে যাওয়ার পথে ঝালরচর এলাকায় তাঁর বহরকে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় লাইসেন্স ও হেলমেট না থাকায় চারটি মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে বহর নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ফিরে যান নুর মোহাম্মদ।
এ ঘটনায় এমপিকে দায়ী করে বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। তাদের অভিযোগ, এমপির নির্দেশেই পুলিশ এ কাজ করেছে।
সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, অথচ জাতীয় অনুষ্ঠানে যেতে বাধা দিচ্ছে প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সততার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। জাতির পিতার শাহাদাৎবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যেতে পারবো না, এটা কেমন কথা। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, এমপির নির্দেশেই পুলিশ এ কাজ করেছে। তিনি পুলিশকে ব্যবহার করে এ ন্যাক্কারজনক কাজ করিয়েছেন।
এর আগে রোববার রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদকে শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়ানগঞ্জের যে কোনো অনুষ্ঠানে যেতে নিষেধ করে উপজেলা প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে উল্লেখ করে তাকে সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়।
শোক দিবস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্য ছিল বলে জানিয়েছেন বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। লাইসেন্স ও হেলমেট না থাকায় বহর থেকে চারটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।