কুরবানির ঈদে ময়মনসিংহের ত্রিশালের হাট কাঁপানো আলোচিত ষাঁড় কালো মানিক এবারো বিক্রি হয়নি। ফলে ধানিখোলা দক্ষিণ ভাটিপাড়া গ্রামের খামারি জাকির হোসেন সুমন পড়েছেন বিপাকে।
গত দুই বছর কুরবানির ঈদে কালো মানিকের দাম হয়েছিল বিশ লাখ টাকা। ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় এবারো বিক্রি হয়নি কালো মানিক। তাই কালো মানিকের মালিক জাকির হোসেন সুমন এ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। গরুটিকে আবারো লালন পালন করতে হবে। যার ব্যয়ভার বহন করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিন কালো মানিক ষাঁড়টির পেছনে ব্যয় হয় ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। এ কুরবানির ঈদে ৫০ মণ ওজনের কালো মানিকের দাম হাঁকা হয়েছিল ৪০ লাখ টাকা। ঢাকায় গাবতলির হাটে দাম হয় ১৭ লাখ টাকা। মালিকের দাবি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু তার এ কালো মানিক।
কালো মানিকের মালিক জাকির হোসেন সুমন বলেন, অনেক শখ করে গত পাঁচ বছর ধরে এই ষাঁড়টিকে আমি দেশীয় খাবার খাইয়ে যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছি। কৃত্রিম কোনো কিছু খাওয়ানো হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে খৈল, ভুষি, ভুট্টা, কলা, ভাত, খড়-ঘাস খাইয়েছি। আমি নিজের চেয়েও বেশি গরুর যত্ন নেই। গত বছর ভালো দাম না পাওয়ায় কালো মানিককে বিক্রি করতে পারিনি। তবে এ বছর আশা করেছিলাম গরুটি বিক্রি করতে পারব। বাড়িতে ২০ লাখ দাম হয়েছিল। পরে ঈদের আগে ঢাকার গাবতলীর হাটে নিয়ে যাই। সেখানেও আগের চেয়ে দাম আরও কম হয়। ষাঁড়টির দাম ১৭ লাখ টাকা হয়। এত কমে কী করে বিক্রি করি। তাই আবার ষাঁড়টিকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসি। এখন ষাঁড়টির পেছনে প্রতিদিন যে টাকা ব্যয় হয় তা নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। এখন এ ষাঁড়টি নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না।
জানা যায়, ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় কালো মানিক। গত পাঁচ বছর ধরে লালন-পালন করে আসছেন জাকির হোসেন সুমন। এর ওজন ৫০ মণ। ষাঁড়টি শান্ত প্রকৃতির ও কালো রঙের হওয়ায় আদর করে এর নাম নাম রাখা হয়েছে কালো মানিক। কালো মানিকের নাম আশপাশের এলাকাসহ সবার মুখে মুখে। বিশাল আকারের কালো মানিককে দেখতে ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষতো বটেই দূর-দূরান্ত থেকেও নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন জাকিরের বাড়িতে ভিড় জমান। দেখতে আসা অনেকেই এটিকে হাতির সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে বিক্রি না হওয়ায় আশপাশের গ্রামবাসীও হতাশ। অনেকেই গরুর মালিককে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। সবাই চান ন্যায্য মূল্যে ষাঁড়টি যেন বিক্রি করতে পারে গরুর মালিক জাকির হোসেন।